HomeBharatNorth East India'আগামী বছর ভোটে জিতলে'.... ভবিষ্যৎবানী হিমন্তর

‘আগামী বছর ভোটে জিতলে’…. ভবিষ্যৎবানী হিমন্তর

- Advertisement -

গুয়াহাটি, ২৮ নভেম্বর: অসম বিধানসভা ২৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্ত নিল পাস হল বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ আইন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই বিল পাশের দিনে শুধু বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার উপর জোর দিলেন না, বরং আরও বড় এক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঘোষণা করে রাজনৈতিক অঙ্গনকে নতুনভাবে আলোড়িত করলেন অসমে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC) বাস্তবায়ন।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের পর যদি আমি আবার মুখ্যমন্ত্রী হই, তবে নতুন সরকারের প্রথম অধিবেশনেই UCC বিল পেশ করা হবে এবং বিলম্ব ছাড়াই তা কার্যকর করা হবে। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ বিল আসলে UCC-এর পথে প্রথম বড় পদক্ষেপ।” এই নতুন আইনে বহুবিবাহকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

   

আরামবাগে SIR সামলাচ্ছে আই প্যাক ! বিস্ফোরক বিজেপি

তবে বিলটি থেকে বাদ রাখা হয়েছে অসমের তফসিলি উপজাতি (ST) সম্প্রদায়কে। ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত স্বশাসিত অঞ্চলগুলোকে। সরকারের যুক্তি, ঐ অঞ্চলে স্বতন্ত্র সাংবিধানিক বিধান কার্যকর থাকায় সেখানে এই আইন প্রযোজ্য হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “এই আইন কোনও ধর্মবিশেষকে লক্ষ্য করে নয়। বহুবিবাহ শুধু একটি সম্প্রদায়ের সমস্যা নয়। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সব সমাজের মধ্যেই এর উপস্থিতি রয়েছে। তাই বিলটি সর্বজনীন।”

বিলটি পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী সর্বসম্মতির আশা করলেও তা হয়নি। এআইইউডিএফ এবং সিপিএম উভয় দলই বিভিন্ন সংশোধনী প্রস্তাব তোলে। কিন্তু সেগুলো ভয়েস ভোটে পরাজিত হয়। বিরোধীরা দাবি করে, আইনের কিছু অংশ আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত ছিল এবং কিছু ক্ষেত্রে ‘সামাজিক বাস্তবতা’ বিবেচনায় নেওয়া উচিত। তবে সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে।

বিধানসভায় হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। তিনি জানান, “ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই ‘Deceptive Marriage’—অর্থাৎ প্রতারণামূলক বিবাহ রোধে একটি আলাদা বিল আনা হবে। বহু ক্ষেত্রে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বা প্রতারণার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার সেই ধরনের অপরাধ কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে।” সরকারের মতে, এই বিলটি মূলত ভুয়ো পরিচয়, ধর্ম লুকিয়ে বিয়ে করা, বা প্রতারণামূলক সম্পর্ক স্থাপনের মতো ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে আইনি কাঠামো তৈরি করবে।

অসমে দীর্ঘদিন ধরেই বহুবিবাহ, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বিবাহ, সম্পত্তি বিতর্ক, এবং ব্যক্তিগত আইনের ভিন্নতা নিয়ে সামাজিক স্তরে বিতর্ক ছিল। এই আইন পাস হওয়া এবং UCC-এর ঘোষণা—দুটিই সেই প্রসঙ্গে বড় মোড় ঘোরানো সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, এটি মহিলাদের অধিকারের দিকে বড় পদক্ষেপ।

তাঁর মতে, “আইনের চোখে সব নাগরিক সমান। ব্যক্তিগত আইনেও সেই সমতা নিশ্চিত করা হবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পদক্ষেপে অসমে বিজেপির সামাজিক রূপান্তরের রাজনীতি আরও সুসংবদ্ধ রূপ পেল। বিশেষ করে মহিলা ভোটারদের মধ্যে এই বিলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বলেই অনুমান।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular