নয়াদিল্লি:পাকিস্তানের সামরিক হামলায় তিন আফগান ক্রিকেটারের মৃত্যু এবং তার পরেই বড় সিদ্ধান্ত নিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (ACB)। শুক্রবার বোর্ড ঘোষণা করেছে, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে আসন্ন ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে তারা সরে দাঁড়াচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু ক্রীড়াজগতেই নয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও গভীর ছাপ ফেলেছে।
এই ঘটনার ঢেউ এসে পৌঁছেছে ভারতীয় রাজনীতিতেও। শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) দলের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এক্স-এ পোস্ট করে লিখেছেন, “পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কাপুরুষদের দল, যারা নিরপরাধ মানুষের রক্তে টিকে আছে। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। তিনি আরও বলেছেন আফগানিস্তানের এই পদক্ষেপ দেখে BCCI এবং ভারত সরকারের শেখ উচিত কীভাবে জাতীয় স্বার্থকে খেলাধুলার উপরে রাখা যায়।”
‘স্বর্ণ প্রাসাদম’: ভারতের সবচেয়ে দামী মিষ্টি! কী আছে তাতে? দামই বা কত?- এটা কেমন?
চতুর্বেদীর এই মন্তব্যে নতুন করে তর্ক শুরু হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক মহলে। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, ভারত সরকার ও BCCI এর পাকিস্তানের সঙ্গে খেলায় অংশ নিয়ে ভুল বার্তা দিচ্ছে শিবসেনা। এ বছরের এপ্রিলেই জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়, যা নিয়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছেছে।
এরপর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের ঘাঁটিতে আঘাত হানে। পাকিস্তান পাল্টা হামলার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। অবশেষে ১০ অক্টোবর দু’দেশের সেনা কর্তারা এক ‘সিজফায়ার’ চুক্তিতে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু আফগানিস্তান এখন অভিযোগ করছে, পাকিস্তান সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে নতুন হামলা চালিয়েছে।
তারপরেও এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তান খেলা নিয়ে বয়ে গিয়েছিল বিতর্কের ঝড়। বিরোধী শিবির প্রধানত কংগ্রেস এবং শিবসেনা ভারত সরকারের তীব্র সমালোচনা করে। ম্যাচে হাত মেলানো নিয়েও চলে বিতর্ক। বিরোধীদের স্পষ্ট অবস্থান ছিল পাকিস্তান বয়কট নিয়ে এবং তারা বলেছিলেন যে যদি পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ খেলার প্রয়োজন ছিল তাহলে অপারেশন সিঁদুরের পরে সারা বিশ্বে প্রতিনিধি দল পাঠানোর দরকার কি ছিল। এই ম্যাচ সম্পূর্ণ টাকার রোজগারের জন্য খেলা হয়েছে এমনটাও শোনা গিয়েছে বিরোদীদের গলায়।
এই ঘটনার পর ভারতের বিরোধী নেতাদের একাংশ আবারও দাবি তুলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রীড়া সম্পর্ক বন্ধ করতে হবে। উদ্ধব ঠাকরে আগেই বলেছিলেন, “যতদিন পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাস বন্ধ না হবে, ততদিন কোনও সম্পর্কই রাখা উচিত নয় না কূটনৈতিক, না ক্রীড়াক্ষেত্রে।” AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি প্রশ্ন তোলেন, “প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না’। তাহলে ক্রিকেটের নামে আর্থিক লাভের জন্য কি আমরা শহিদদের আত্মবলিদান ভুলে যাব?”