দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) শনিবার মণিপুর সফরে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম তিনি রাজ্যে পা রাখতে চলেছেন। সেই সংঘর্ষে এখনো পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৬০ জন মানুষ এবং গৃহহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার পরিবার।
মণিপুরের মুখ্যসচিব পুনীত কুমার গোয়েল জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রাজ্যে শান্তি, স্বাভাবিকতা এবং উন্নয়নের পথ খুলে দেবে।” মোদীর কর্মসূচিতে মিজোরাম সফরও রয়েছে, যেখানে তিনি উদ্বোধন করবেন ব্যারাবি–সৈরাং রেললাইন প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহল কার্যত উত্তাল। বিরোধী শিবিরের দাবি, এতদিন ধরে রাজ্যে সহিংসতা চললেও প্রধানমন্ত্রী একবারও আসেননি, যা জনগণের প্রতি তাঁর ‘উদাসীনতার প্রমাণ’। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এ প্রসঙ্গে বলেন, “মণিপুরের সংকট অনেক দিন ধরেই চলছে। প্রধানমন্ত্রী অবশেষে যাচ্ছেন, এটিই ভালো। তবে এত দেরি করে গেলে কতটা ফল মিলবে, সেটাই প্রশ্ন।”
অন্যদিকে, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশ তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য মণিপুরে থাকবেন। তাঁর কথায়, “এত বড় সংকটের মধ্যে ২৯ মাস ধরে মানুষ অপেক্ষা করেছে। এখন মাত্র কয়েক ঘণ্টার সফরকে যদি সমাধান ভাবা হয়, তবে তা প্রকৃতপক্ষে রাজ্যের মানুষের প্রতি অপমান।”
এই সফরকে ঘিরে বিরোধী দলগুলির অভিযোগ—এটি শুধু একটি ‘প্রতীকী ভিজিট’। প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ভাগ করতে চাইতেন, তবে তিনি শিবিরে গিয়ে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতেন। শুধু প্রশাসনিক বৈঠক করে চলে যাওয়া সমস্যার সমাধান নয়।
মণিপুরবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফর রাজ্যের সংঘর্ষ থামাতে এবং উন্নয়নের নতুন দিশা দেখাতে সাহায্য করবে। আবার অনেকের মতে, এতদিন নীরব থাকার পর হঠাৎ সফরে আসা রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টামাত্র।
সব মিলিয়ে, পুজোর মুখে মণিপুর সফর নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। মোদীর সফর বাস্তবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে কতটা কার্যকর হবে, তা এখন সময়ই বলবে।