আগরতলা: ত্রিপুরার আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক, ৫২৪ বছরের প্রাচীন ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের (Tripura Sundari Temple) নবনির্মিত রূপ আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার বিকেলে তিনি আগরতলায় পৌঁছেই হেলিকপ্টারে যাবেন দক্ষিণ ত্রিপুরার উদয়পুরে অবস্থিত শক্তিপীঠে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে গোটা ত্রিপুরা জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানিয়েছেন, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে গোটা রাজ্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তিনি ইতিমধ্যেই দু’বার মন্দিরে গিয়ে প্রস্তুতির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখেছেন।
প্রসাদ (PRASHAD) প্রকল্পের আওতায় কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের উদ্যোগে প্রায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ ও পরিবেশ সৌন্দর্যায়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি ত্রিপুরা সরকার অতিরিক্ত ৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। নবনির্মিত চত্বর রাতের আলোয় যেন রূপকথার আবেশ তৈরি করছে।
পলাতনা হেলিপ্যাড থেকে মন্দির পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রোড শো-এর আয়োজন করা হয়েছে। ভক্তদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও সরকারি সূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কোনও জনসভা নেই, তবে তিনি মন্দিরে পূজা দেবেন ও নবনির্মিত কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করবেন।
১৫০১ খ্রিস্টাব্দে মহারাজা ধন্য মানিক্য এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের ৫১ শক্তিপীঠের মধ্যে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির অন্যতম এবং পূর্ব ভারতে এটি কালীঘাট ও কামাখ্যা মন্দিরের পর তৃতীয়। স্বাধীনতার পর ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরা ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়, কিন্তু মন্দির আজও ত্রিপুরার ঐতিহ্যের গৌরব বহন করে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই পর্যন্ত ১১তম ত্রিপুরা সফর এটি। ২০১৯ সালে তিনি প্রথমবার মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শেষবার তিনি ত্রিপুরায় এসেছিলেন।
ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের পুনর্নির্মাণ ও সৌন্দর্যায়ন শুধু রাজ্যের ভক্তদের জন্য নয়, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্যও আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকার আশা করছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ত্রিপুরায় ধর্মীয় পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
