গোয়ায় নৌবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন মোদীর

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi) এ বছর দীপাবলি উৎসব উদযাপন করবেন ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে গোয়া উপকূলে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হল সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিন্দূর’ অভিযানের সাফল্যকে সম্মান জানানো। এই অভিযানে পাহালগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত দৃঢ় জবাব দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী সেই সাহসিকতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এবার আলোর উৎসব পালন করবেন দেশের ‘মেন ইন হোয়াইট’-এর সঙ্গে।

Advertisements

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদী প্রতি বছর দীপাবলির দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন সেনা সদস্যদের সঙ্গে উৎসব উদযাপন করেন। তাঁর এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন সেনাদের মনোবল বাড়ায়, তেমনি দেশের জনগণকেও অনুপ্রাণিত করে দেশপ্রেমের বার্তায়।

প্রথম বছর অর্থাৎ ২০১৪-তে মোদী পৌঁছেছিলেন সিয়াচেন হিমবাহে, যেখানে হিমশীতল তাপমাত্রার মধ্যেও তিনি সেনাদের সঙ্গে আলোর উৎসব ভাগ করেছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি পাঞ্জাবের অমৃতসরে দোগরাই যুদ্ধ স্মৃতিসৌধে শহিদদের শ্রদ্ধা জানান এবং সেনা পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।

২০১৬ সালে তাঁর দীপাবলি কেটেছিল হিমাচল প্রদেশের সুমদো অঞ্চলে, ভারত-চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বিএসএফ ও সেনাদের সঙ্গে। ২০১৭ সালে তিনি যান জম্মু ও কাশ্মীরের গুরেজ সেক্টরে, আর ২০১৮ সালে তিনি উত্তরাখণ্ডের হরশিলে আইটিবিপি জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি উদযাপন করেন।

২০১৯ সালে মোদী গিয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে, ২০২০ সালে রাজস্থানের ঐতিহাসিক লঙ্গেওয়ালা সীমান্তে, যেখানে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ২০২১ সালে তিনি ছিলেন নওশেরা সেক্টরে, আর ২০২২ সালে কার্গিলে পৌঁছে কার্গিল যুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধা জানান।

গত দুই বছর তিনি দীপাবলি উদযাপন করেছেন হিমাচল প্রদেশের লেপচা ও গুজরাটের সির ক্রিকে মোতায়েন সেনাদের সঙ্গে। প্রতি বছরই মোদীর এই সফর প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে এক অনন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।

Advertisements

সূত্র অনুযায়ী, এ বছর গোয়া উপকূলে নৌবাহিনীর সঙ্গে দীপাবলি উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য হল সাম্প্রতিক অপারেশন সিন্দূর-এর সাফল্যকে তুলে ধরা। এই অভিযানে ভারতীয় নৌসেনা এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী মিলিতভাবে পাহালগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর পাল্টা আঘাত হেনেছিল, যা দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই সফরে নৌসেনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, জওয়ানদের সঙ্গে সময় কাটাবেন এবং তাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাবেন। এছাড়া, তিনি দেশের প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কিছু ঘোষণাও করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে যে তিনি শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতা নন, বরং দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল একজন দেশপ্রেমিক। আলোর উৎসবের দিনে সৈনিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি জাতিকে এক অদৃশ্য বার্তা দেন—যে দেশের সীমান্তে যারা পাহারা দেয়, তারাই আসল নায়ক।

গোয়ার সমুদ্রতীরে যখন দীপাবলির আলোয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ উজ্জ্বল হবে, তখন তা হবে দেশবাসীর জন্য এক গর্বের মুহূর্ত—যেখানে দেশরক্ষা, সাহস এবং উৎসবের আনন্দ মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে।