আহমেদাবাদ: গুজরাটের একতা নগরে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় সংহতির বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রীয় একতা দিবসের মঞ্চ থেকে মোদীর কণ্ঠে শোনা গেল ভারতের আত্মবিশ্বাসী নিরাপত্তা-নীতির ঘোষণা৷ তিনি বলেন, “আজকের ভারত তার শত্রুকে সুনির্দিষ্ট ও কড়া জবাব দিতে জানে।”
স্ট্যাচু অফ ইউনিটির পাদদেশে আয়োজিত ঐতিহাসিক সমারোহে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অপারেশন সিঁদুর গোটা বিশ্বকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, ভারত এখন ঘরে ঢুকে জবাব দেয়। কেউ যদি এই দেশের দিকে চোখ তোলে, ভারত তার মাটিতে প্রবেশ করে প্রতিক্রিয়া জানায়। আজ পাকিস্তান ও সন্ত্রাসের রক্ষকরা ভারতের প্রকৃত শক্তি জানে।”
‘প্যাটেলের স্বপ্নের ভারত’ ও কংগ্রেসকে কটাক্ষ
মোদী জানান, এই দৃঢ় মনোভাব আসলে সর্দার প্যাটেলের সেই ভাবনারই সম্প্রসারণ, যেখানে একটি ঐক্যবদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ভারতের স্বপ্ন লালিত হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রতি কটাক্ষ ছুড়ে তিনি বলেন, “যারা ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে, তারা দেশের ঐক্য ও নিরাপত্তাকে দুর্বল করে। পূর্ববর্তী সরকারগুলির নীতিই জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপন্ন করেছিল।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সর্দার প্যাটেলের আদর্শই আমাদের পথপ্রদর্শক। বহিরাগত হুমকি হোক বা অন্তর্দেশীয় চ্যালেঞ্জ, ভারত আজ কোনও আপস করে না।”
নকশালবাদের বিরুদ্ধে সাফল্যের দাবি PM Modi Security Policy Operation Sindoor
প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালের আগে নকশালপন্থীরা দেশের বহু অঞ্চলে কার্যত নিজেদের শাসন কায়েম করেছিল।
“স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল উড়িয়ে দেওয়া হত, প্রশাসন ছিল অসহায়। কিন্তু আমরা শহুরে নকশালদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অভিযান চালিয়েছি। আগে যেখানে ১২৫ জেলা নকশালবাদের কবলে ছিল, আজ তা নেমে এসেছে মাত্র ১১ জেলায়,” বলেন মোদী।
‘অনুপ্রবেশ রুখে দেশ রক্ষা’
জাতীয় ঐক্য ও নিরাপত্তার প্রসঙ্গে মোদী ফের সতর্ক করলেন অনুপ্রবেশের বিপদ নিয়ে। “ভোটের রাজনীতির জন্য অনেকে দেশের সীমানা দুর্বল করেছে। কিন্তু জাতির পরিচয় ও নিরাপত্তা যদি বিপন্ন হয়, তাহলে প্রতিটি নাগরিকই বিপন্ন। আমাদের সংকল্প হতে হবে, অবৈধভাবে দেশে থাকা প্রতিটি অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত ও সরিয়ে দিতে হবে।”
ঐক্যের দর্শনে প্যাটেলের স্মরণ
বক্তৃতার শেষে প্রধানমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “ঐক্যবদ্ধ ভারতে মতের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু হৃদয়ের বিভাজন চলবে না। ভারতের বৈচিত্র্যই আমাদের ঐক্যের প্রাণশক্তি।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রী স্ট্যাচু অফ ইউনিটির পাদদেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ও জাতীয় ঐক্যের শপথ পাঠ করান। স্বাধীনতার পর ভারতের সংহতির স্থপতি সর্দার প্যাটেলের অবদানকে স্মরণ করে ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।



