ব্রাজিলের জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা মোদির

বর্তমানে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত G20 সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সম্মেলনের বাইরেও, তিনি নানা দেশের নেতাদের…

PM Modi Meets Giorgia Meloni at G20 Summit in Brazil

বর্তমানে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত G20 সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সম্মেলনের বাইরেও, তিনি নানা দেশের নেতাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ, যুক্তরাজ্যের কিয়ার স্টারমার, নরওয়ের জোনাস গার স্টোরে, পর্তুগালের লুইস মন্টেনেগ্রো এবং স্পেনের পেড্রো সানচেজ সহ আরো অনেক নেতার নাম উল্লেখযোগ্য।

এই বৈঠকগুলোতে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং টেকনোলজি ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই বৈঠকগুলিকে বিশ্বে ভারতের ভূমিকাকে আরও দৃঢ় করতে এবং দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

   

জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক
প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi) আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে আলোচনা করেছেন। বাইডেনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকে মোদি “এমন একটি আনন্দের মুহূর্ত” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে উভয়ের সাক্ষাতের ছবি শেয়ার করেছেন এবং একটি ভিডিওও সামনে এসেছে যেখানে তাদের মধ্যে এক উষ্ণ হাত মেলানোর দৃশ্য দেখা যায়।

প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi)এবং বাইডেনের মধ্যে হওয়া এই বৈঠকে দুই দেশকেই আরও কাছাকাছি আনার উদ্দেশ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করতে কীভাবে সহযোগিতা বাড়ানো যায়, সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা, সাইবার সুরক্ষা, এবং নতুন উদীয়মান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi) ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তারা দুই দেশের সম্পর্ক আরো গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষত, তারা প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

মোদি (Narendra Modi) টুইট করে জানান, “আমরা সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার উন্নতি নিয়ে আলোচনা করেছি। ভারত-ইতালি বন্ধুত্ব পৃথিবীকে আরও ভালো করার জন্য ব্যাপকভাবে অবদান রাখতে পারে।” মেলোনি তার বক্তব্যে বলেন, “এই বৈঠকটি আমাদের যৌথ কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ, যা ২০২৫-২৯ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে কাজ করার জন্য একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনার সূচনা করবে।” দুই দেশের মধ্যে যৌথ কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা ২০২৫-২৯ নিয়ে ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নতুন প্রযুক্তি, পরিচ্ছন্ন শক্তি, মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁকে “বন্ধু” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, ভারত ও ফ্রান্স পরস্পর আরও কাছাকাছি আসবে এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। ম্যাক্রঁও মোদির সঙ্গে এই বৈঠকে উভয়ের পূর্ববর্তী রাষ্ট্রীয় সফরের ফলাফল এবং আন্তর্জাতিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্রিটেন, নরওয়ে, পর্তুগাল, স্পেন, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশেষ করে বাণিজ্য, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরে এবং পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টেনেগ্রো’র সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।

এছাড়াও, তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইয়লের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এখানে তারা অঞ্চলীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং পরিবেশগত পরিবর্তনের মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরোতে অনুষ্ঠিত G20 সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠক ভারতের আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। ভারত এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক সমস্যাগুলি সমাধানে কাজ করছে এবং এই বৈঠকগুলি ভারতের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার এক উপায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি তার বৈদেশিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি দৃঢ় এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন যা আগামীতে ভারতকে বৈশ্বিক মঞ্চে আরও উচ্চতর অবস্থানে নিয়ে যাবে।