৭৬তম সংবিধান দিবসে দেশবাসীর উদ্দেশে বিশেষ চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রনায়কের ভঙ্গিতে তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন— ভারতকে ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’-এর উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে হলে নাগরিকদের কর্তব্যবোধই হবে ভারতের সর্বোচ্চ শক্তি।
ভোটদান থেকে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, গণতন্ত্রকে আরও সুদৃঢ় করতে মানুষের দায়িত্ববোধ কতটা অপরিহার্য, তা স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন মোদী।
‘সংবিধানের শক্তিই দেশের অগ্রগতির প্রেরণা’
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী লেখেন— সংবিধানের মূল চেতনা এবং তার শক্তিই ভারতের এগিয়ে চলার পথ দেখায়। তাই প্রতিটি কাজ, প্রতিটি সিদ্ধান্ত এমন হওয়া উচিত যা সংবিধানকে সুসংহত করে এবং জাতীয় স্বার্থকে সামনে এগিয়ে দেয়।
দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতার অনুভূতিই নাগরিককে দায়িত্ববান করে তোলে— এমনই বার্তা দিয়ে মোদী উল্লেখ করেন, “কর্তব্যই ভবিষ্যৎ ভারত গড়ার শক্তি।”
ব্যক্তিগত স্মৃতি- ২০১৪-র প্রণাম থেকে ২০১৯-এ সংবিধান মাথায় তোলা PM Modi Constitution Day Letter
চিঠিতে মোদী নিজের রাজনৈতিক জীবনের দুটি প্রতীকি মুহূর্ত তুলে ধরেছেন—
২০১৪ সালে সংসদের সিঁড়িতে তাঁর প্রণাম
২০১৯ সালে সংবিধান মাথায় তোলার দৃশ্য
মোদীর মতে, এগুলি কেবল ব্যক্তিগত অনুভূতি নয়, বরং ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তাঁর অটল প্রতিশ্রুতির প্রতীক। তিনি আরও বলেন— সংবিধানের শক্তি না থাকলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা এক সাধারণ পরিবারের সন্তান কখনও দেশের শাসনভার গ্রহণ করতে পারতেন না।
সংবিধান রচনার নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী গভীর শ্রদ্ধা জানান সংবিধান প্রণেতাদের, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, ড. বি আর আম্বেদকর, গণপরিষদের বিশিষ্ট নারী সদস্যরা
মোদীর বক্তব্য, এই সব নায়কের দূরদর্শিতা ও আত্মবলিদান ভারতকে আজকের শক্তিশালী গণতন্ত্রে পরিণত করেছে।
ইতিহাসের বহু তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত একসঙ্গে
প্রধানমন্ত্রী জানান, এ বছরের সংবিধান দিবস একাধিক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের মিলনক্ষণের মতো—
সর্দার প্যাটেল ও বীরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী
‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর
গুরু তেগ বাহাদুরের ৩৫০তম শহিদ দিবস
মোদীর মতে, এসব মুহূর্ত ভারতীয়দের কর্তব্যবোধকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়।
‘ভোট করা সবচেয়ে পবিত্র কর্তব্য’
দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে ভোটদানকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “একজন নাগরিক হিসেবে কখনও ভোট দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।”
স্কুল ও কলেজে প্রতি ২৬ নভেম্বর নবীন ভোটারদের সম্মান জানিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
‘আজকের সিদ্ধান্তই ঠিক করবে আগামী ভারতের পথ’
চিঠির শেষভাগে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—স্বাধীনতার শতবর্ষ (২০৪৭) ও সংবিধানের শতবর্ষ (২০৪৯)-এর ভারত কেমন হবে, তা নির্ভর করবে আজকের নাগরিকদের দায়িত্ববোধের উপর।
তিনি মনে করিয়ে দেন, আজকের দায়িত্ববোধই আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করবে।
