ব্যবসায়ীদের জিএসটি ২.০ বোঝান, দেশীয় পণ্যে উৎসাহ দিন: সাংসদদের পরামর্শ মোদীর

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Pm Modi) সোমবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) সাংসদদের উদ্দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি সাংসদদের অনুরোধ করেন, নিজেদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়…

Pm Modi Calls on NDA MPs to Educate Traders on GST 2.0 and Strengthen ‘Make in India’ Drive

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Pm Modi) সোমবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) সাংসদদের উদ্দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি সাংসদদের অনুরোধ করেন, নিজেদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় মেলা, প্রদর্শনী ও সম্মেলনের আয়োজন করে জিএসটি ২.০ (GST 2.0) সংস্কারের সুবিধাগুলি তুলে ধরতে এবং একইসঙ্গে কেন্দ্রের উচ্চাভিলাষী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পকে আরও এগিয়ে নিতে।

সূত্র অনুযায়ী, সম্প্রতি এনডিএ সাংসদদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর কাঠামোর সংস্কার এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তিনি স্পষ্ট করে জানান, জিএসটি ২.০ শুধুমাত্র কর আদায় সহজ করবে না, বরং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের (MSME) জন্য নতুন সুযোগের দরজা খুলে দেবে। এই সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো ব্যবসায়ের স্বচ্ছতা বাড়ানো, প্রক্রিয়া সহজ করা এবং সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বড় শিল্পপতি—সবার জন্য এক সমান সুযোগ তৈরি করা।

   

ব্যবসায়ীদের জন্য সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান

প্রধানমন্ত্রী(Pm Modi) সাংসদদের বলেন, প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় অন্তত ২০ থেকে ৩০টি বৈঠকের আয়োজন করতে হবে, যেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ী, দোকানদার, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং ট্রেডারদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই বৈঠকগুলিতে বিশেষজ্ঞরা জিএসটি ২.০-এর সুবিধা, কর সংক্রান্ত নতুন নিয়ম, এবং এর মাধ্যমে কীভাবে ব্যবসা আরও সহজ ও লাভজনক হতে পারে তা ব্যাখ্যা করবেন।

মোদীর মতে, বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এখনও জিএসটি ২.০-এর নতুন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না। এর ফলে তারা সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন না। তাই সাংসদদের মাধ্যমে এই তথ্য প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, “যে দিন সাধারণ ব্যবসায়ী বুঝতে পারবেন, জিএসটি ২.০ তার ব্যবসায় কতটা স্বচ্ছতা ও সুবিধা নিয়ে আসছে, সেই দিন থেকেই দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।”

মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রচারে নতুন মাত্রা

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ শুধু একটি স্লোগান নয়, এটি দেশের আত্মনির্ভরতার মন্ত্র। ভারতের উৎপাদনশীল শক্তিকে বিশ্বে তুলে ধরতে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সাংসদদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি পরামর্শ দেন, সাংসদরা স্থানীয় মেলা, প্রদর্শনী, ট্রেড ফেয়ার ও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশীয় পণ্য ও প্রযুক্তির প্রচার বাড়ান।

Advertisements

তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের তরুণ প্রজন্ম উদ্ভাবনে এগিয়ে আসছে। স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগও বাড়ছে। “যদি আমাদের সাংসদরা স্থানীয় উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ ও উৎপাদকদের উৎসাহিত করেন, তাহলে আমরা শুধু আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে পারব না, বরং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যকে বিশ্ববাজারে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারব,”* বলেন মোদী।

অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পথে সাংসদদের ভূমিকা

এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দেন যে, দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সাফল্যের জন্য সাংসদদের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছে সরকারী নীতি ও সুবিধাগুলি পৌঁছে দেওয়ার কাজ সাংসদদের হাতে।তিনি সাংসদদের আহ্বান জানান, শুধু তথ্য পরিবেশন নয়, বরং ব্যবসায়ীদের সমস্যাও সরাসরি শুনতে। প্রয়োজনে সেগুলি কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে দিয়ে সমাধান বের করতে হবে। এতে ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রতি আস্থা রাখবেন এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন **কর ব্যবস্থাকে সহজ ও স্বচ্ছ করবে**, অন্যদিকে **দেশীয় উৎপাদনশীলতা এবং উদ্যোক্তা সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করবে**। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য এটি বড় সুবিধা হিসেবে আসতে চলেছে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাংসদদের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তারা শুধু প্রচারক নয়, বরং **সেতুবন্ধনকারী** হিসেবে কাজ করবেন—সরকার, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে। মেলা, সেমিনার ও জনসচেতনতা প্রচারের মাধ্যমে যদি সঠিকভাবে তথ্য পৌঁছে দেওয়া যায়, তবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প এবং জিএসটি ২.০-এর লক্ষ্য পূরণ হবে অনেক দ্রুত।