নয়াদিল্লি: আজ থেকেই শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন৷ তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ২০২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট দেশের উন্নতি এবং ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। বিশেষ করে ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী সরকারের মূল অগ্রাধিকার হিসেবে নবীন উদ্ভাবন, অন্তর্ভুক্তি ও বিনিয়োগ-এর উপর গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন৷ বাজেটে যুবদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন নমো। (PM ahead of Parliament session)
এদিকে, বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ বিরোধী দলগুলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে চায়।
বাজেট সেশন: ১০টি মূল পয়েন্ট PM ahead of Parliament session
রাষ্ট্রপচির ভাষণ
৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মু সংসদের যৌথ অধিবেশন উদ্বোধন করবেন। এটি সেশনটির প্রথম কর্মসূচি, যেখানে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা উপস্থাপন
প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৫ উপস্থাপন করবেন। প্রথমে এটি লোকসভায়, পরে রাজ্যসভায় জমা দেওয়া হবে। এটি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন ও পরবর্তী পদক্ষেপের রূপরেখা প্রদান করবে।
বাজেট পেশ
১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০২৫ সালের বাজেট পেশ করবেন, যা তার অষ্টম বাজেট পেশের ঘটনা হবে। বাজেটে বিশেষভাবে শিল্প, অবকাঠামো, শিক্ষা ও যুবকদের জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
বিরোধী দলগুলোর দাবি
বিরোধী দলগুলো বাজেট সেশনকে ঘিরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দাবীগুলো হল:
ওয়াকফ সংশোধনী বিল: এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং বিরোধীরা এর তীব্র বিরোধিতা করেছে৷
মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু: বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে ভিআইপি সুবিধা এবং সাধারণ তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার প্রতি অবহেলা করা হয়েছে। এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বাজেট অধিবেশন৷
সর্বদল বৈঠক
বাজেট অধিবেশনের আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিরোধী দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টারি কমিটির রাজনৈতিকীকরণ এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় বিরোধী রাজ্যগুলিতে বৈষম্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ তোলে।
বিরোধী দলগুলোর আপত্তি
বিরোধী দলগুলো সরকারের প্রাথমিক আলোচনা ক্যালেন্ডার নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের দাবি, এই ক্যালেন্ডার সংসদীয় প্রথার বিরোধী এবং ব্যবসা পরামর্শ কমিটি (BAC)-এর মাধ্যমে আলোচনার বিষয়গুলি নির্ধারণ হওয়া উচিত।
রাজ্যসভার উত্তেজনা
কিছু সংসদ সদস্য রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধানখর-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে, তিনি বিরোধী সদস্যদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন না। এটি একটি রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে শীতকালীন অধিবেশনে তার বিরুদ্ধে একটি অভিসংশন প্রস্তাব বাতিল হওয়ার পর।
দুটি পর্বে অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে৷ প্রথম পর্ব: ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্ব: ১০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত।
সরকারের পক্ষ থেকে ১৬টি বিল পেশ করা হবে, যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল হল-:
ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল।
ব্যাংকিং আইন (সংশোধনী) বিল।
রেলওয়ে (সংশোধনী) বিল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (সংশোধনী) বিল।
তেলক্ষেত্র (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) সংশোধনী বিল।
ইমিগ্রেশন বিল
ইমিগ্রেশন ও বিদেশী আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব, যা ভারতে বিদেশী নাগরিকদের প্রবেশ, প্রস্থান ও অবস্থান সম্পর্কিত কার্যক্রম সহজতর করতে সহায়তা করবে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বিরোধী দলের উদ্বেগের প্রতি খেয়াল রেখে বলেছেন, “আমরা তাদের উদ্বেগ বুঝতে পারছি৷ আমরা আশা করি বাজেট সেশন সফল ও উৎপাদনশীল হবে। সকল দলের সহযোগিতা একটি অর্থবহ সংসদীয় সেশন নিশ্চিত করবে।”