সেনাপ্রধানের হুশিয়ারিতে উদ্বেগের সুর পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

pakistan-defence-minister-reacts-to-indian-army-chief-warning-2025

ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী (Pakistan Defence) খাজা আসিফ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দক্ষিণ এশিয়ার বাতাসকে আরও ভারী করে তুলেছে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে আমরা কোনোভাবেই উড়িয়ে দিতে পারি না। তিনি যেভাবে বলেছেন, ভারত পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধের চিন্তা করতে পারে এটা একটা গুরুতর হুঁশিয়ারি।”

Advertisements

খাজা আসিফের এই বক্তব্যের পর থেকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক-সামরিক মহলে যেমন উত্তেজনা বেড়েছে, তেমনি পড়শি দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে এক অদ্ভুত উৎকণ্ঠা।ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী গত সপ্তাহে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে চালিয়ে যায়, তাহলে ভারতের কাছে একাধিক বিকল্প রয়েছে—সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে শুরু করে আরও বড় মাত্রার সামরিক পদক্ষেপ পর্যন্ত।”

   

ওল্ড ওয়াইন ইন নিউ বটল’: ট্রাইবুনাল রিফর্মস অ্যাক্ট বাতিল, কেন্দ্রকে তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের

তাঁর কথায় ‘বড় মাত্রার সামরিক পদক্ষেপ’ শব্দগুচ্ছকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা এবং সামরিক নেতৃত্ব ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের’ সম্ভাবনা হিসেবে পড়ে নিয়েছে। খাজা আসিফ বলেছেন, “এটা কেবল কথার কথা নয়, এটা একটা সুস্পষ্ট হুমকি।”পাকিস্তানের ভেতরে এখন যেন যুদ্ধের ছায়া নেমেছে।

লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডির রাস্তায় সাধারণ মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা—‘আবার কি যুদ্ধ লাগবে?’ বাজারে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, পেট্রল পাম্পে লম্বা লাইন, ব্যাংকে টাকা তোলার হিড়িক যেন ১৯৯৯-এর কারগিল যুদ্ধের আগের সেই দিনগুলো ফিরে এসেছে।

Advertisements

পঞ্জাবের গ্রামাঞ্চলে অনেকে ইতিমধ্যেই পরিবার-পরিজন নিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছেন।বাংলাদেশেও এই খবরে উদ্বেগ কম নয়। আমরা যারা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি নিবিড়ভাবে দেখি, তারা জানি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ মানেই এই অঞ্চলের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে পড়া। তেলের দাম আকাশছোঁয়া, শেয়ার মার্কেট ধস, বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ এসবের প্রভাব সরাসরি পড়বে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কলকাতা বন্দর পর্যন্ত।

ঢাকার মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এখন থেকেই ভাবছে, আরেকটা যুদ্ধ হলে মুদ্রাস্ফীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে!নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ কেউই নিরাপদ বোধ করছে না। কাঠমান্ডুর একজন বিশ্লেষক বলেছেন, “যদি দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধে জড়ায়, তাহলে পারমাণবিক শীত (nuclear winter) এর প্রভাবে হিমালয়ের কৃষিও ধ্বংস হয়ে যাবে।” আফগানিস্তানের তালেবান সরকার নীরব। তারা জানে, যুদ্ধ বাড়লে পাকিস্তানের দিকে শরণার্থীর ঢল নামবে, যা তাদের জন্য নতুন মাথাব্যথা।

আন্তর্জাতিক মহলও চুপ নেই। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া—সবাই ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ রাখছে। তবে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। কারণ পাকিস্তানে তাদের বিপুল বিনিয়োগ, আর ভারতে রয়েছে লাখ লাখ প্রবাসী কর্মী। দুই দেশের যুদ্ধ মানে তাদের অর্থনীতিতেও ধাক্কা।পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এখন হাই অ্যালার্টে।