অপারেশন সিঁদুর পর ফের পাকিস্তান মদতে হামলার ছক

নয়াদিল্লি: ছ’মাস আগে ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) সফলভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগাঁও সন্ত্রাস হামলার প্রতিশোধ নেয়। কিন্তু সেই অভিযানের অর্ধ বছর পর ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যকলাপ। গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে, পাকিস্তান থেকে নিয়ন্ত্রিত লস্কর-ই-তইবা (LeT) ও জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) আবারও সীমান্ত পেরিয়ে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Advertisements

NDTV-র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বর থেকেই পাকিস্তান সীমান্তে কার্যকলাপ বেড়েছে। একাধিক সন্ত্রাসী দল পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (SSG) ও ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI)-এর সহায়তায় জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছে। বিশেষত লস্করের এক শীর্ষ জঙ্গি শামশেরের নেতৃত্বে থাকা দল নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC)-র দুর্বল জায়গাগুলি খুঁজে বের করতে ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি চালাচ্ছে।

   

গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন, এই নজরদারির উদ্দেশ্য কেবল তথ্য সংগ্রহ নয়, বরং অস্ত্র ফেলা বা “ড্রোন ড্রপ” অপারেশন চালানোর প্রস্তুতি। সূত্রের দাবি, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফিদায়িন ধাঁচের একাধিক হামলার ছক তৈরি করছে পাকিস্তান-সমর্থিত এই সংগঠনগুলি।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও সেনা ইতিমধ্যেই উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ইলেকট্রনিক নজরদারি, সেনা টহল এবং গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সেনা সূত্রে খবর, শীত নামার আগে পাকিস্তান মদতপুষ্ট গোষ্ঠীগুলি প্রবলভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। কারণ, তুষারপাত শুরু হলে পাহাড়ি পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনুপ্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

কাশ্মীর প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ড্রোন নজরদারি ও সন্দেহজনক চলাচলের সমস্ত তথ্য নজরে রাখা হচ্ছে। আমাদের বাহিনী সর্বতোভাবে প্রস্তুত।” বিশেষজ্ঞদের মতে, অপারেশন সিঁদুর পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে চাপে ফেলেছিল। তাই এখন তারা ভিন্ন কৌশল নিচ্ছে ছোট ছোট ইউনিটে হামলা, স্থানীয় স্লিপার সেল সক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তিনির্ভর অপারেশন।

Advertisements

এছাড়াও গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে, পাকিস্তানের মুজাফ্ফরাবাদ ও মানসেহরায় নতুন জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে তাদের কাশ্মীরে পাঠানোর প্রস্তুতিও সম্পন্ন। কয়েকজন ইতিমধ্যেই অনুপ্রবেশ করেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এখন সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সামরিক শক্তির পাশাপাশি সাইবার ইন্টেলিজেন্স ও ড্রোন প্রতিরোধ ব্যবস্থাও জোরদার করা প্রয়োজন।

গোয়েন্দা সূত্রে আরও ইঙ্গিত, আগামী মাসগুলিতে কাশ্মীর সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের মাত্রা বাড়তে পারে। ভারতের প্রতিরক্ষা মহল বলছে, “অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান মদতপুষ্ট সংগঠনগুলি মরিয়া।”