‘অপারেশন সিন্ধুকে’ ভারতের কূটনীতির জয় বলে প্রশংসা চুঘের

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান তীব্র সংঘাতের মধ্যে ভারত সরকার ‘অপারেশন সিন্ধু’ (operation-sindhu) নামে একটি উচ্চাভিলাষী উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে, যার মাধ্যমে ইরানে আটকে পড়া…

operation-sindhu praised by tarun chugh

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান তীব্র সংঘাতের মধ্যে ভারত সরকার ‘অপারেশন সিন্ধু’ (operation-sindhu) নামে একটি উচ্চাভিলাষী উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে, যার মাধ্যমে ইরানে আটকে পড়া প্রায় ১০০০ ভারতীয় নাগরিক, প্রধানত ছাত্রদের, নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই অভিযানের সাফল্যের জন্য বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ ভারতের কূটনৈতিক দক্ষতা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

তিনি বলেন, “একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইরানের (operation-sindhu) মতো দেশ যখন চলমান সংঘাতের মধ্যে তার এয়ারস্পেস ভারতের জন্য খুলে দেয়, তখন এটি ভারতের বিদেশ নীতি, কূটনীতি এবং নির্ভরযোগ্যতার একটি বড় জয়। ‘অপারেশন সিন্ধু’ ভারতের নাগরিকদের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার প্রমাণ।” এই অভিযান কেবল ভারতীয় নাগরিকদেরই নয়, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিকদেরও উদ্ধারে ভারতের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।

   

২০২৫ সালের ১৮ জুন ভারত সরকার ‘অপারেশন সিন্ধু’ (operation-sindhu) শুরু করে, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে ইরানে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। ইরানের এয়ারস্পেস সাধারণত আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের জন্য বন্ধ থাকলেও, ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ইরান তিনটি বিশেষ উদ্ধার ফ্লাইটের জন্য তার এয়ারস্পেস খুলে দেয়। এই সিদ্ধান্ত ভারতের পররাষ্ট্র নীতির একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে মাশহাদ থেকে ২৯০ জন ভারতীয় ছাত্র, যাদের অধিকাংশই জম্মু ও কাশ্মীরের, দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর শনিবার ভোরে তুর্কমেনিস্তানের আশগাবাত থেকে আরেকটি ফ্লাইট দিল্লিতে অবতরণ করে।

এখন পর্যন্ত ৫১৭ জন ভারতীয় নাগরিক এই অভিযানের অধীনে দেশে ফিরেছেন। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানে প্রায় ৪০০০ ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন, যাদের অর্ধেক ছাত্র। এই অভিযানের মাধ্যমে আগামী দিনগুলোতে আরও নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

তরুণ চুঘ এই অভিযানকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “২০১৪ সালের ২৬ মে থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখনই বিদেশে ভারতীয় নাগরিকরা সংকটে পড়েছেন, তিনি সাহসের সঙ্গে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

‘অপারেশন সিন্ধু’ (operation-sindhu) কেবল একটি উদ্ধার অভিযান নয়, এটি বিশ্বের কাছে একটি ঘোষণা যে ভারত তার নাগরিকদের যেকোনো সংকটে পাশে থাকবে।” তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতীয় দূতাবাসের দ্রুত এবং সংবেদনশীল পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত তীব্র হওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় ইরান ‘অপারেশন সিভিয়ার পানিশমেন্ট’ নামে পাল্টা হামলা শুরু করেছে।

এই সংঘাতের মধ্যে ইরানের এয়ারস্পেস বন্ধ থাকলেও ভারতের জন্য ব্যতিক্রম করা হয়েছে, যা ভারতের কূটনৈতিক প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে এই উদ্ধার অভিযানকে সহজতর করেছে।

Advertisements

ভারত শুধু নিজের নাগরিকদেরই নয়, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিকদেরও উদ্ধারে এগিয়ে এসেছে। নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার সরকারের অনুরোধে ভারতীয় দূতাবাস ইরানে তাদের নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। (operation-sindhu) এই পদক্ষেপ ভারতের আঞ্চলিক সংহতি এবং মানবিক দায়িত্বের প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। শনিবার ইরানে অবস্থানরত ভারতীয় দূতাবাস এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

অপারেশন সিন্ধুর (operation-sindhu) প্রথম ধাপে ১৭ জুন ইরানের উত্তরাঞ্চল থেকে ১১০ জন ছাত্রকে আর্মেনিয়ায় স্থলপথে স্থানান্তর করা হয়। এরপর তারা ইয়েরেভান থেকে বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লি পৌঁছায়। এই অভিযানে পাকিস্তানের এয়ারস্পেস ব্যবহার করা হয়নি, যা ভূ-রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার কারণে উল্লেখযোগ্য। জম্মু ও কাশ্মীর ছাত্র সমিতি এই অভিযানের প্রশংসা করে বলেছে, “মাশহাদ থেকে ২৯০ জন ছাত্রকে নিয়ে মাহান এয়ারের উদ্ধার ফ্লাইট দিল্লিতে নিরাপদে অবতরণ করেছে।”

তরুণ চুঘ এই অভিযানকে ভারতের বিশ্বব্যাপী নির্ভরযোগ্যতার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “ইরানের এয়ারস্পেস খোলা ভারতের কূটনৈতিক বিজয়। এটি প্রমাণ করে যে ভারত মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিগুলোর মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছে।” সামাজিক মাধ্যমে বিজেপি নেতারা এই অভিযানকে মোদী সরকারের ‘নতুন ভারত’-এর প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন, যা বিশ্বে সম্মানিত, ভীত এবং বিশ্বস্ত।

জাতীয় দল থেকে দূরে, নতুন লড়াইয়ে ফিরতে এবার ইংল্যান্ডে তরুণ ক্রিকেটার

ইরানে ভারতীয় ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই তেহরানে ইসরায়েলি হামলার সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। একজন উদ্ধার হওয়া ছাত্র জানিয়েছেন, “ইরানের পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। ভারতীয় দূতাবাস এবং আমাদের রাষ্ট্রদূত উদ্ধার প্রক্রিয়াকে খুব মসৃণ এবং নিরাপদ করেছেন।” এই অভিযানে তুর্কি এয়ারস্পেস ব্যবহার না হওয়ায় ভারত আর্মেনিয়া এবং তুর্কমেনিস্তানের মাধ্যমে বিকল্প পথ ব্যবহার করেছে।

এই অভিযান ভারতের পররাষ্ট্র নীতির দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক সংকটে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। ইরানের (operation-sindhu) সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের এই পদক্ষেপ একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে, ভারত তার নাগরিকদের সুরক্ষায় যেকোনো পরিস্থিতিতে পাশে থাকবে। আগামী দিনগুলোতে অপারেশন সিন্ধু আরও বেশি নাগরিককে নিরাপদে ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে