ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ রবিবার ঘোষণা করেছেন যে, সরকার “মাদক চক্রের প্রতি কোনও দয়া দেখাবে না” এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের “নিচ থেকে উপরে এবং উপরে থেকে নিচে” এই দ্বৈত পদ্ধতি মাদক পাচারের বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করছে। একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অমিত শাহ বলেছেন, “মাদক চক্রের প্রতি কোনও দয়া নেই। মাদকমুক্ত ভারত গড়তে মোদি সরকারের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। আজ ৮৮ কোটি টাকার মেথামফেটামিন ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের ৪ সদস্যকে ইম্ফাল ও গৌহাটি অঞ্চলে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই মাদক উদ্ধার কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তের সফলতার প্রমাণ, যা নিচ থেকে উপরে এবং উপরে থেকে নিচে এর পদ্ধতিকে নিখুঁতভাবে প্রয়োগ করছে।”
অমিত শাহ মন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও জানিয়েছেন যে, মাদক পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। “আমাদের মাদক অভিযান অব্যাহত থাকবে,” তিনি যোগ করেছেন,যে মাদক পাচার ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সরকারের দৃঢ় সংকল্পের পরিচায়ক। আগের মাসের ৩ মার্চ, অসম রাইফেলস এবং মিজোরাম পুলিশ মিজোরাম রাজ্যের চম্পই জেলা থেকে মেথামফেটামিন ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে, যার মূল্য প্রায় ৬০.৬৩ কোটি। এই অভিযান ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়, যা “ক্রসিং পয়েন্ট ওয়ান, জোখাওথার” এলাকায় পরিচালিত হয়েছিল।
অসম রাইফেলসের একটি অফিসিয়াল পোস্টে বলা হয়, “অসম রাইফেলস এবং মিজোরাম পুলিশ ২০.২০৯ কেজি মেথামফেটামিন ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে, যার মূল্য ৬০.৬২৭ কোটি, যা ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে চম্পই জেলার জোখাওথার এলাকার ক্রসিং পয়েন্ট ওয়ান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।” এই অভিযানে তিন জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদও উদ্ধার করা হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অসম রাইফেলস এবং মিজোরাম পুলিশ মিজোরামে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে, যার ফলে তিন জনকে গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি, নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে লওংটলাই শহরে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এই ধরনের অভিযানের মাধ্যমে সরকার মাদক পাচারের চক্র ভেঙে ফেলার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মিজোরাম এবং অসমের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলো আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীদের জন্য প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এরই মধ্যে, সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, এবং অসম, দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীদের অন্যতম প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে। এই রাজ্যগুলি মায়ানমারের মতো দেশের সাথে সীমান্ত ভাগ করে, যেখানে মেথামফেটামিন এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য উৎপাদন ও পাচারের একটি বড় বাজার রয়েছে।
এই অঞ্চলে মাদক পাচার রোধে অসম রাইফেলস, মিজোরাম পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে কাজ করছে। অমিত শাহ জানিয়ে দেন যে, মাদক চক্রের বিরুদ্ধে লড়াইতে সরকারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং এই চক্রের যে কোনো স্তরের অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সরকার পিছপা হবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রী অমিত শাহের এই ঘোষণা এবং সফল অভিযানের ফলস্বরূপ, সরকারের মাদক পাচারের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপগুলি ইতিমধ্যে ফলপ্রসূ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য মাদকমুক্ত ভারত গড়া, এবং এর জন্য তারা বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই অভিযানে সফলতার ফলে, দেশের যুব সমাজকে মাদক থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
অতএব, সরকারের এই পদক্ষেপগুলি স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে যে, মাদক পাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং দেশের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সরকারের এই লড়াই অবশ্যই সফল হবে। ভারত সরকার মাদক পাচারের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অমিত শাহ মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা মাদক শিকার অব্যাহত রাখব,” এবং এর মাধ্যমে তিনি একসঙ্গে জনগণ ও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।