ভোটব্যাংক মজবুত করতে নীতীশের নয়া চাল

বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের স্ট্রাটেজি সাজাতে এবং ভোটব্যাংক মজবুত করতে নয়া পদক্ষেপ নীতিশ সরকারের (Nitish Kumar)। বিহার সরকার সম্প্রতি একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছে, যার…

Nitish Kumar new project

বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের স্ট্রাটেজি সাজাতে এবং ভোটব্যাংক মজবুত করতে নয়া পদক্ষেপ নীতিশ সরকারের (Nitish Kumar)। বিহার সরকার সম্প্রতি একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ৫ লক্ষ টাকার সুদমুক্ত ঋণ এবং ৫ লক্ষ টাকার ভর্তুকি দেওয়া হবে।

এই প্রকল্প, যার নাম মুখ্যমন্ত্রী দিব্যাং জন উদ্যমী যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, যা রাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

   

তবে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই প্রকল্পটি আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটব্যাংক মজবুত করার একটি কৌশল হিসেবেও কাজ করতে পারে।২০২৫ সালের ২৬ আগস্ট রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এই যোজনার অধীনে, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে বা বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য মোট ১০ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা পাবেন।

এর মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে এবং বাকি ৫ লক্ষ টাকা ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করা হবে। এই ঋণ ফেরত দেওয়ার জন্য সাত বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা উদ্যোক্তাদের জন্য সুবিধাজনক বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের লক্ষ্য নিয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের ‘সাত নিশ্চয়’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই প্রকল্পটি বিহারের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এর আগে, মুখ্যমন্ত্রী মহিলা উদ্যমী যোজনা এবং মুখ্যমন্ত্রী যুব উদ্যমী যোজনার মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে নারী ও যুবকদের জন্য উদ্যোক্তা উন্নয়নে সফলতা অর্জন করেছে সরকার। এই নতুন প্রকল্পটি বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য একই ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিহারের সমাজকল্যাণ বিভাগের মতে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই প্রকল্পের ঘোষণা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং তাদের কল্যাণে এই ধরনের উদ্যোগ ভোটারদের মধ্যে সরকারের প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।

Advertisements

বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), এই প্রকল্পকে নির্বাচনী কৌশল হিসেবে দেখছে। তারা অভিযোগ করেছে যে, নীতিশ সরকার প্রায়ই নির্বাচনের আগে এই ধরনের জনমুখী প্রকল্প ঘোষণা করে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এই প্রকল্পটি রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ।

এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনকারীদের জন্য কিছু শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনকারীকে বিহারের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং সরকার স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম মাধ্যমিক (১০ম শ্রেণি) পাস করতে হবে।

এছাড়াও, আবেদনকারীদের বয়স ১৫ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে হতে হবে, যদিও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য ৫ বছরের বয়স ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই শর্তগুলি প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে সুবিধা পৌঁছানো নিশ্চিত করার জন্য রাখা হয়েছে।

এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা বিতরণের জন্য বিহার সরকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। প্রকল্পের তদারকি ও বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা আবেদন যাচাই এবং তহবিল বিতরণের কাজ তদারকি করবে। এছাড়াও, উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম চালু করা হবে, যাতে তারা তাদের ব্যবসা সফলভাবে পরিচালনা করতে পারে।

তবে নির্বাচনের আগে নীতিশ সরকারের এই প্রকল্প নিয়ে সরব বিরোধীরা বলছেন। নীতিশ কুমার ভালো করে জানেন তার সময় শেষ। তাই ভোটের আগে মানুষের সহানুভূতি কুড়োনোর চেষ্টা করছেন। তবে সমোলোচকরা বলেছেন ভোটচুরি নিয়ে বিরোধীদের মিথ্যে আস্ফালন এবং SIR কেন্দ্র করে তেজস্বীর এপিক কার্ড কান্ড দেখে মানুষ আর বিরোধীদের দিকে ঝুঁকবেন না।