মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের (Niti Aayog) বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নীতি আয়োগের একটি রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তে বিহারের মানচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যাকে তিনি ‘গুরুতর ভুল’ এবং ‘অপমান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এই ঘটনায় তিনি নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারপার্সনকে (Niti Aayog) একটি চিঠি লিখে তাঁর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভুলকে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রতি অসম্মান বলে মনে করছেন এবং এর জন্য নীতি আয়োগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
Here goes my letter today to the Vice Chairperson, NITI Aayog, New Delhi, expressing my unequivocal disapproval of their grave lapse in mapping West Bengal! pic.twitter.com/4PM4TlgDRR
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 9, 2025
ঘটনার পটভূমি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টের মাধ্যমে নীতি আয়োগের এই ভুলের কথা তুলে ধরেন। (Niti Aayog) তিনি জানান, নীতি আয়োগের ‘পশ্চিমবঙ্গের জন্য সামারি রিপোর্ট’-এর কভারে বিহারের মানচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি এটিকে শুধুমাত্র (Niti Aayog)একটি ভুল হিসেবে নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ‘অজ্ঞতা ও অসম্মানের’ প্রকাশ হিসেবে দেখছেন। তাঁর চিঠিতে তিনি এই ঘটনার জন্য নীতি আয়োগের কাছে কৈফিয়ত দাবি করেছেন এবং এটিকে ‘পক্ষপাতমূলক’ আচরণ বলে সমালোচনা করেছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের (Niti Aayog) নেতা অমিত মজুমদারও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি একাধিক পোস্টে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের রিপোর্টে বিহারের মানচিত্র ব্যবহার করা কোনো ভুল নয়, এটি একটি অপমান। এটি অজ্ঞতা ও অসম্মানের স্পষ্ট প্রদর্শন। বাংলা এই অপমান ভুলবে না।” তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের সভা বয়কট করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মমতার চিঠি ও প্রতিবাদ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Niti Aayog) তাঁর চিঠিতে নীতি আয়োগের এই ভুলকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের ভুল শুধুমাত্র প্রশাসনিক অদক্ষতাই নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রতি অসম্মান প্রকাশ করে।
তিনি নীতি আয়োগের কাছে (Niti Aayog) এই ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, নীতি আয়োগের এই ভুল পশ্চিমবঙ্গকে ‘নগণ্য’ হিসেবে দেখার মানসিকতার প্রতিফলন। তিনি এটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পক্ষপাতমূলক’ আচরণের অংশ বলে অভিযোগ করেছেন।
মমতা (Niti Aayog) এর আগেও নীতি আয়োগের সভা বয়কট করেছেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, নীতি আয়োগের সভায় তাঁকে মাত্র পাঁচ মিনিট বক্তৃতার সময় দেওয়া হয়েছিল, যেখানে এনডিএ শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ১৫ মিনিটেরও বেশি সময় দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার পর তিনি নীতি আয়োগের সভাকে ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে সমালোচনা করেছিলেন। এবারের মানচিত্রের ভুল তাঁর সেই অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা (Niti Aayog) পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য মমতার নীতি আয়োগের সভা বয়কটের সমালোচনা করে বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী সভায় না গিয়ে রাজ্যের জনগণকে বঞ্চিত করছেন। এটি তাঁর শেষ সুযোগ ছিল। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি পরাজিত হবেন।” সিপিআই(এম)-এর নেতা সুজন চক্রবর্তীও মমতার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, “তিনি কেবল দুর্নীতির প্রতি আগ্রহী, রাজ্যের উন্নয়নের প্রতি নয়।”
তবে তৃণমূলের (Niti Aayog) নেতারা এই ঘটনাকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। তারা দাবি করছেন, নীতি আয়োগের এই ভুল কেন্দ্রীয় সরকারের পশ্চিমবঙ্গের প্রতি উপেক্ষার প্রমাণ। কেন্দ্রের এই মানসিকতা আমরা মেনে নেব না।” নীতি আয়োগ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
তবে সূত্রের খবর, তারা এই ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে এবং রিপোর্টটি সংশোধন করার উদ্যোগ নিতে পারে। এই ঘটনা নীতি আয়োগের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিতে অগ্রহণযোগ্য ত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিদেশি শক্তির প্রয়োজন নেই, ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য তৈরি হচ্ছে সুপারসনিক ফাইটার ট্রেনার
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
সামাজিক মাধ্যমে (Niti Aayog) এই ঘটনা তীব্র আলোচনার সৃষ্টি করেছে। এক্স-এ একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “নীতি আয়োগের এই ভুল পশ্চিমবঙ্গকে নগণ্য হিসেবে দেখার মানসিকতার প্রকাশ। এটি কেবল অজ্ঞতা নয়, অপমান।” তৃণমূল সমর্থকরা এই ঘটনাকে ‘বাংলা বিরোধী ষড়যন্ত্র’ হিসেবে প্রচার করছে, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
নীতি আয়োগের(Niti Aayog) এই ভুল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ এবং তৃণমূলের নেতাদের ক্ষোভ এই ঘটনাকে কেবল একটি প্রশাসনিক ভুলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং এটিকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের উত্তেজনার একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে এই ভুল সংশোধন এবং ক্ষমা প্রার্থনা না করা হলে, এই বিতর্ক আরও জটিল হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এই অপমান ভুলবে না, এমনটাই দাবি করছে তৃণমূল কংগ্রেস।