এনএইচআরসি-র অভিযোগে তদন্তের মুখে ‘জার্নালিজম গ্রান্ট’

nhrc-iamc-journalism-grant-fcra-violation-2025

নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বর: ভারতের মানবাধিকার কমিশন (NHRC) এবার সরাসরি নড়েচড়ে বসল আমেরিকা ভিত্তিক সংগঠন ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল (IAMC)-এর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগে। অভিযোগ, এই সংগঠনটি তাদের ২০২৫ সালের সাংবাদিকতা অনুদান প্রকল্পে (Journalism Grant) বিদেশি অর্থ ব্যবহার করেছে, যা ভারতের FCRA (Foreign Contribution Regulation Act) আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হতে পারে।

Advertisements

‘Network of Justice’ নামে একটি সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে এনএইচআরসি। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, IAMC-এর সাংবাদিকতা অনুদান প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কিছু সাংবাদিক ও সংগঠন বিদেশি উৎস থেকে অর্থ পেয়েছে, যা ভারতের নীতিমালার আওতায় অনুমোদিত নয়।

   

পিএম কিষাণ আপডেট: একসঙ্গে ৪,০০০ টাকা পেতে পারেন যোগ্য কৃষকরা! জানুন বিস্তারিত

এনএইচআরসি সূত্রে জানা গেছে, কমিশন ইতিমধ্যেই বিদেশ মন্ত্রক (MEA) এবং গৃহ মন্ত্রকের এফসিআরএ শাখা (MHA-FCRA wing) উভয়কেই নোটিস পাঠিয়েছে। তাদের কাছে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ‘Action Taken Report’ চাওয়া হয়েছে, যাতে জানা যায়, IAMC-এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisements

রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, IAMC-এর অর্থায়নে চলা সাংবাদিকতা প্রকল্পগুলির মাধ্যমে দেশে বিভেদমূলক বা পক্ষপাতদুষ্ট বয়ান ছড়ানোর আশঙ্কাও রয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে সূত্রের খবর। IAMC-এর তরফে এখনও পর্যন্ত এই অভিযোগের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তাদের মুখপাত্র পূর্বে একাধিকবার দাবি করেছেন যে সংগঠনটি মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য কাজ করে এবং সমস্ত অর্থের উৎস আইনসিদ্ধ।

একজন প্রাক্তন সরকারি আমলা বলেছেন, “যদি IAMC সত্যিই বিদেশি অর্থ দিয়ে সাংবাদিকতা প্রকল্প পরিচালনা করে থাকে, তাহলে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেই স্বাধীনতা বিদেশি প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করতে পারে না।” এফসিআরএ আইনের অধীনে, যে কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি বিদেশি তহবিল ব্যবহার করতে চাইলে সরকারের অনুমোদন থাকা বাধ্যতামূলক। অনুমতি ছাড়া বিদেশি অর্থ গ্রহণ করলে তা গুরুতর অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় এবং সংগঠনের নিবন্ধন বাতিল পর্যন্ত হতে পারে।

দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই ঘটনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত’ বলে অভিহিত করেছে। তারা মনে করছে, বিদেশি অর্থায়নে সাংবাদিকতা কার্যক্রমের স্বচ্ছতা রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। তদন্তের পর IAMC-এর কর্মকাণ্ড যদি সত্যিই আইনের বাইরে প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি শুধু একটি সংগঠনের নয়, বরং বিদেশি অর্থে পরিচালিত অন্যান্য বেসরকারি প্রকল্পগুলির ওপরও বড় প্রভাব ফেলবে। কেন্দ্র এখন বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।