নয়া আয়কর বিলে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আয়কর আইন ১৯৬১-এর বদলে আনা হচ্ছে এই বিল। মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের স্বস্তি দিতে ২০২৫ সালের সাধারণ বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করে বড় ছাড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এবারের বাজেটে বার্ষিক আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা এক লাফে পাঁচ লাখ টাকা বাড়িয়ে ১২ লাখ টাকা করার কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। অর্থাৎ, কারও আয়কর এক লাখ টাকার মধ্যে হলে এক পয়সাও আয়কর দিতে হবে না। চাকরিজীবীদের জন্য আয়করে বাড়তি ছাড় দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়িয়ে ৭৫,০০০ টাকা করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এর ফলে কর্মরত পেশাদার ও বেতনভোগী ব্যক্তিরা আরও বেশি কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন।
ব্যক্তিগত আয়কর স্ল্যাবের নতুন কাঠামো:
১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় – সম্পূর্ণ করমুক্ত
১২-১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় – ৫% কর
১৫-২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় – ১০% কর
২০ লক্ষ টাকার বেশি আয় – ৩০% কর
এই পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতে বাড়তি টাকা থাকবে, যা সরাসরি বাজারে চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে। এর ফলে কর্মরত পেশাদার ও বেতনভোগী ব্যক্তিরা আরও বেশি কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন। গত কয়েক বছরে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গিয়েছে। শিল্পমহল ও সাধারণ নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরে আয়করের সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবি মেনেই এবার আয়করের ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
নতুন আয়কর স্ল্যাবে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখা হয়েছে, যা কম আয়ের মানুষের জন্য ইতিবাচক। পাশাপাশি, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির করদাতারাও কিছুটা স্বস্তি পাবেন। তবে ২৪ লাখের বেশি আয় হলে ৩০% কর বহাল রাখা হয়েছে।
নয়া আয়করের (২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ) স্ল্যাব নতুন কাঠামো:
₹০-৪ লাখ: করমুক্ত
₹৪-৮ লাখ: ৫%
₹৮-১২ লাখ: ১০%
₹১২-১৬ লাখ: ১৫%
₹১৬-২০ লাখ: ২০%
₹২০-২৪ লাখ: ২৫%
₹২৪ লাখের বেশি: ৩০%
নতুন আয়কর স্ল্যাবে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখা হয়েছে, যা কম আয়ের মানুষের জন্য ইতিবাচক। পাশাপাশি, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণির করদাতারাও কিছুটা স্বস্তি পাবেন। তবে ২৪ লাখের বেশি আয় হলে ৩০% কর বহাল রাখা হয়েছে।
মধ্যবিত্তদের জন্য বড় সুরাহা:
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “মধ্যবিত্ত শ্রেণিই দেশের চালিকা শক্তি। তাই এই বাজেটে তাঁদের জন্য বড় সুরাহার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” এই পরিবর্তনের ফলে মানুষের হাতে বাড়তি টাকা থাকবে, যা ভোগ্যপণ্যের বাজার ও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা:
উৎসমূলে কর (TDS) আদায়ের হার কমিয়ে প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
সুদের উপর করমুক্ত সীমা বাড়ানো হয়েছে, যাতে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বাড়তি সুবিধা পান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন কর কাঠামো মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নিম্ন আয়ভুক্তরা করমুক্ত সুবিধা পাবেন, তবে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করের হার তুলনামূলকভাবে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ফলে ভোগ্যব্যয়ের পরিমাণ বাড়তে পারে, যা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে।