পাটনা: রোজগারের আশায় কাজের খোঁজে ভিনদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের একাধিক শ্রমিক। সোমবার আচমকা সরকার বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠল এভারেস্টের দেশ নেপাল। রাজধানীর রাস্তায় জ্বলছে আগুন, পুড়ছে বাড়িঘর, লুটপাট, গোলাগুলিতে জখম মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে নিজের দেশে ফেরার চেষ্টায় নেপাল থেকে রওনা হয়ে যান হাজারও পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant labours)।
মঙ্গলবার থেকেই বিহারের রাক্সৌল সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফিরে আসতে শুরু করেন নেপালে (Nepal) আটকে পোড়া ভারতীয়েরা। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার হেঁটে, টোটো করে কোনোক্রমে ভারত সীমান্তে পৌঁছন বহু মানুষ। কিন্তু এই পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র আন্দাজ পাননি নেপালে কর্মরত বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
শুক্রবার বিহারের বাগাহার বাল্মিকিনগর গণ্ডক চেকপোস্টের কাছে কাতারে কাতারে ভিড় জমান নেপালে (Nepal) আটকে পোড়া পরিযায়ী শ্রমিকেরা (Migrant labours)। চোখেমুখে আতঙ্ক, ক্লান্তির ছাপ। তাঁরা জানিয়েছেন, আচমকা পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে যায়। গাড়ি ভাড়া করার মত অর্থ না থাকায় ক্ষুধা, তৃষ্ণা নিয়ে পায়ে হেঁটে কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে দেশে ফিরেছেন তাঁরা। সীমান্তে সশস্ত্র সীমা বলের দ্বারা কাগজপত্র যাচাইয়ের পর দেশে ফিরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন নেপাল-ফিরতি শ্রমিকেরা।
কারও হাতে ঝোলা, তো কারও কোলে শিশু, পায়ে হেঁটে দেশে ফিরেছেন মহিলা থেকে বয়স্ক। বাগাহার এক পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant labours)জানিয়েছেন, নেপালের (Nepal) বুটওয়ালে কাজ করতেন তিনি। নেপালের গণঅভ্যুত্থানের পর অরাজকতা, অস্থিরতার জেরে সেখানে থাকা বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। কোনোক্রমে জিনিসপত্র গুছিয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তাঁরা।
খিদে, তেষ্টা নিয়ে খোলা আকাশের নীচেই রাত কাটিয়ে সীমান্তের কাছে পৌঁছন। যেকোনো মুহূর্তে অপ্রিয় ঘটনা ঘটার আতঙ্ক, আশঙ্কার মধ্যে দিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন। শ্রমিকদের কাছে যে সামান্য টাকা ছিল তাও পথে খরচ হয়ে গেছে। নারী ও শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। নেপালে ফিরে গিয়ে কাজ করার কথা বর্তমানে তাঁরা কল্পনাও করতে পারছেন না।
নেপাল সংকটের ফলে ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant labours) অসহায়তা এবং কাজের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে ভিনদেশ বা ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়ার কথা সামনে উঠে এসেছে।তারা তাদের বাড়ি ছেড়ে বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছে, কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, এই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্য, নিজের দেশে কর্মসংস্থান কবে হবে?