নেপালে ভারী বৃষ্টিতে প্রাণহানি, পাশে থাকার বার্তা মোদীর

কাঠমান্ডু: নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং আশেপাশের পাহাড়ি এলাকায় শুক্রবার থেকে অবিরাম ভারী বর্ষণের ফলে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দেশজুড়ে অন্তত…

Nepal Flood

কাঠমান্ডু: নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং আশেপাশের পাহাড়ি এলাকায় শুক্রবার থেকে অবিরাম ভারী বর্ষণের ফলে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দেশজুড়ে অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছে এবং এখনও ১১ জন নিখোঁজ রয়েছে। মৃতদের মধ্যে কোশি প্রদেশে ৩৬ জন এবং মাধেশে ৩ জন। এছাড়া আহত হয়েছে ১৩ জন।

Advertisements

নেপালের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রিশিরাম তিওয়ারি বলেছেন, “প্রবল বৃষ্টির কারণে বাগমতী নদীসহ অন্যান্য নদী বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে। এর ফলে কাঠমান্ডুর স্থানীয় সড়ক, বাড়িঘর এবং বসতঘর প্লাবিত হয়েছে।” পাহাড়ে ঘেরা কাঠমান্ডু শহর এখন দেশের অন্য অংশের সঙ্গে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন। প্রিথভি হাইওয়ে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ভূমিধসে বন্ধ হয়েছে। কিছু সেতু ধ্বংস হওয়ায় শত শত যাত্রী আটকে পড়েছেন।

   

ইলাম জেলায় ভূমিধসের ফলে ২৭ জন নিহত হয়েছে এবং ৫ জন নিখোঁজ। উদয়পুরে বন্যা ও ভূমিধসে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নেপালের সরকার দেশজুড়ে ২৮টি স্থানে সড়ক পুনরায় খোলার জন্য বুলডোজার ও সেনাবাহিনীর সাহায্যে কাজ করছে। কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে ঘরোয়া ফ্লাইট বিপর্যস্ত হয়েছে, যদিও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলছে।

নেপালের বিপর্যয়ে ভারতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের সীমান্তবর্তী উত্তরবঙ্গের জেলা—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারে—ভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। নদী ভরাট হওয়ায় বাড়ি ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারত সরকার, বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে, যে কোনো প্রয়োজনে তাত্ক্ষণিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বন্যার কারণে শত শত পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। কাঠমান্ডু উপত্যকায় তিন দিনের জন্য যানজট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাগমতী নদীর তীরবর্তী এলাকায় নেপাল সেনারা মানুষের সম্পদ উদ্ধার ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, সেনারা বন্যায় ডুবে থাকা মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বিপর্যয় মোকাবিলায় বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই ধরনের বিপর্যয় দেখিয়েছে যে ভারী বর্ষা ও ভূমিধসের সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।

সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা এবং সতর্ক থাকা প্রতিটি নাগরিকের জন্য অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় ত্রাণ কার্যক্রমে মিলিত প্রচেষ্টা বিঘ্নিত মানুষদের রক্ষা করতে পারে।