শরিকদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বিজেপি

বড়দিনে নয়াদিল্লিতে বড় বৈঠক৷ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার বাসভবনে প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক (NDA meeting)। এই বৈঠকে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি শরিক দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত…

NDA meeting in new Delhi for future plan

বড়দিনে নয়াদিল্লিতে বড় বৈঠক৷ বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার বাসভবনে প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক (NDA meeting)। এই বৈঠকে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি শরিক দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, তেলেগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু, আপনা দল নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল, জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী, টিডিপি নেতা রামমোহন নাইডু এবং জেডিইউর রাজীবরঞ্জ সিং।

বৈঠকের আলোচনার মূল বিষয়:
আম্বেদকর ইস্যুতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কৌশল
সূত্রের খবর, বৈঠকে আম্বেদকর ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। অমিত শাহ অভিযোগ করেন যে তাঁর বক্তব্যের একটি অংশ কংগ্রেসের তরফে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আউট অফ কনটেক্সট তুলে ধরা হয়েছে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এনডিএ শরিকদের কংগ্রেসের ভূমিকা তুলে ধরতে বলা হয়েছে। অমিত শাহ শরিকদের অনুরোধ করেন, সংবিধান রচনায় কংগ্রেসের অবদান এবং আম্বেদকরের ইস্যুতে তাদের দাবির যথার্থতা নিয়ে সরব হতে। এছাড়া, শরিকদেরকে এই বিষয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

   

শরিকদের সঙ্গে যোগাযোগের বিশেষ ব্যবস্থা
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে, একজন পূর্ণমন্ত্রী এবং একজন রাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়মিতভাবে শরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। এনডিএর পক্ষ থেকে প্রতিটি ইস্যুতে শরিকদের জানানো হবে এবং তাদের মতামত গ্রহণ করা হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শরিকদের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আসন্ন দিল্লি ও বিহার নির্বাচন
দিল্লি এবং বিহারের আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গও বৈঠকে উত্থাপিত হয়। নির্বাচনে এনডিএ শরিকদের কৌশল কী হবে এবং কীভাবে ভোটারদের আকৃষ্ট করা যাবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব শরিকদেরকে নির্বাচনী প্রচারে আরও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ করেছেন।

শরিকদের ভূমিকা এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
এনডিএর শরিকরা বৈঠকের পরে জানিয়েছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে শরিকদের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। চন্দ্রবাবু নাইডু বলেন, “আম্বেদকর ইস্যুতে এনডিএর অবস্থান স্পষ্ট। শরিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।”

অনুপ্রিয়া প্যাটেল জানিয়েছেন, “আমাদের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করতে মন্ত্রীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমরা সব সময় এনডিএর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ।”

অন্যদিকে, এইচডি কুমারস্বামী বলেন, “আসন্ন নির্বাচনের আগে এমন বৈঠক খুবই প্রয়োজন ছিল। আমরা সবাই মিলে এনডিএর অবস্থান আরও মজবুত করতে কাজ করব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনডিএ এই বৈঠকের মাধ্যমে শরিকদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা বিজেপির রাজনৈতিক পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কংগ্রেসের সমালোচনা এবং শরিকদের ভূমিকা জোরদার করার মাধ্যমে বিজেপি আসন্ন নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।

এনডিএর এই বৈঠক শুধু শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে নয়, বরং কংগ্রেসকে আম্বেদকর ইস্যুতে চাপে ফেলতে একটি সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।