Jammu Kashmir: বন্ধ জাতীয় সড়ক! ধ্বংসের পথে জম্মু কাশ্মীরের ফল শিল্প

জম্মু-কাশ্মীর, ১৬ সেপ্টেম্বর: গভীর সংকটে জম্মু কাশ্মীরের অর্থিনীতি (Jammu Kashmir)। বৃষ্টি এবং ভূমিধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে জম্মু শ্রীনগর জাতীয় সড়ক। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই জাতীয় সড়ক…

Jammu Kashmir economy

জম্মু-কাশ্মীর, ১৬ সেপ্টেম্বর: গভীর সংকটে জম্মু কাশ্মীরের অর্থিনীতি (Jammu Kashmir)। বৃষ্টি এবং ভূমিধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে জম্মু শ্রীনগর জাতীয় সড়ক। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকবে। এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মার খেয়েছে কাশ্মীরের ফল ব্যবসা। বুধবার শাসক ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) সহ অন্যান্য দল, এই সিদ্ধান্তকে ‘উদ্দেশ্যমূলক ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছেন।

তারা দাবি করেছেন যে, ফলমূল ভর্তি ট্রাকগুলিকে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক, অন্যথায় অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি অপরিসীম হয়ে উঠবে। এই ঘটনা কাশ্মীরের ফল শিল্পকে গভীর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই ঘটনায় কৃষকরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

   

শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক (এনএইচ-৪৪) কাশ্মীর উপত্যকার বাইরের বিশ্বের সঙ্গে একমাত্র সড়ক যোগাযোগের সীমা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভূমিধস, পাহাড় থেকে পাথর পড়া এবং ভারী বৃষ্টির কারণে বন্ধ রয়েছে। এই সড়কের বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ফলমূল ভর্তি ট্রাক আটকে পড়েছে, যার ফলে সোপিয়ান , সোপোর এবং হান্ডওয়ারের মতো ফল বাজারগুলোতে আপেল এবং অন্যান্য ফল পচে যাচ্ছে।

কাশ্মীর ভ্যালি ফ্রুট গ্রোয়ার্স কাম ডিলার্স ইউনিয়ন (কেভিএফজিডিইউ) অনুমান করেছে যে, এই মরশুমে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, “আমরা ট্রাক ভাড়া করে ফল লোড করেছিলাম আশায়, কিন্তু সড়কে আটকে থাকার পর ফল পচে যাচ্ছে। এখন শ্রমিকদের পয়সা দিয়ে নিজেদের ফসল ফেলে দিতে হচ্ছে।”

জাতীয় সড়ক বন্ধের ফলে কাশ্মীরের অর্থনীতির ৭০ শতাংশ অবদানকারী আপেল শিল্পকে সরাসরি আঘাত হানছে, যা বছরে প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা বলেছেন, “এটি কাশ্মীরের উপর একটি অর্থনৈতিক আক্রমণ। ফলের মরশুমে এই সড়ক বন্ধ রাখা কৃষকদের জীবিকা ধ্বংস করার ইচ্ছাকৃত চক্রান্ত।

কেন্দ্রীয় সরকার এবং জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ট্রাকগুলো মুঘল রোড বা অন্যান্য পথ দিয়ে চলতে পারে।” এনসি-র সঙ্গে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলের নেতারাও এই বন্ধকে ‘অর্থনৈতিক অন্ধকার’ বলে অভিহিত করেছেন। সিপিআই(এম)-এর নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি বলেছেন, “হাজারো ফল ভর্তি ট্রাক আটকে থাকায় কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

Advertisements

এটি শুধু কৃষকদের নয়, সমগ্র উপত্যকার অর্থনীতির জন্য বিপর্যয়কর। ইউনিয়ন এবং রাজ্য সরকারকে জরুরি সমাধান খুঁজতে হবে।” তারা দাবি করেছেন যে, ছয় চাকার ট্রাকগুলোকে মুঘল রোড দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু দশ চাকার বড় ট্রাকগুলোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই, যা বেশিরভাগ ফল পরিবহন করে।

কাশ্মীরের ফল শিল্প ভারতের আপেল উৎপাদনের ৭০ শতাংশ সরবরাহ করে, কিন্তু এই সড়কের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা একটি বড় সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কের উন্নয়ন এবং বিকল্প যোগাযোগের অভাবে এই ধরনের সংকট বারবার দেখা দিচ্ছে। কৃষক সংগঠনগুলো দুই দিনের বন্ধ ডেকেছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বিচার ছাড়াই মন্ত্রী অপসারণ! সংসদে উত্তাল বিরোধী শিবির

এই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে স্থানীয় মানুষের প্রত্যাশা, সরকার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে কৃষকদের জীবিকা রক্ষা করবে। যদি এই বন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে কাশ্মীরের অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যা হাজারো পরিবারের জীবনকে প্রভাবিত করবে।