Sunita Williams: মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার পর সুনীতার শরীরে আসতে পারে এই বড় পরিবর্তন

মহাকাশ থেকে ২৮৬ দিন পর পৃথিবীতে ফিরেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Williams)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বুচ উইলমোর, নিক হগ এবং আলেকজান্ডার গর্বুনভ।…

NASA Astronauts Sunita Williams and Butch Wilmore Return to Earth: What Happens Next

মহাকাশ থেকে ২৮৬ দিন পর পৃথিবীতে ফিরেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Williams)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বুচ উইলমোর, নিক হগ এবং আলেকজান্ডার গর্বুনভ। তাঁদের ফিরে আসার সময় মহাকাশে থাকার যে অভিজ্ঞতা ছিল, তা একদিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, অন্যদিকে মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি বিশাল কীর্তি।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকার কথা ছিল ৮ দিন, তবে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৮৬ দিনে। মহাকাশ স্টেশন থেকে পৃথিবীতে ফেরার জন্য স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে চেপে তারা দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষ করে ৩টা ২৭ মিনিটে ফ্লোরিডার সমুদ্রে অবতরণ করেন।

   

তবে, পৃথিবীতে ফিরলেও সুনীতা ও তার সহকর্মীদের এখনই পরিবারের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব নয়। নাসা জানাচ্ছে, তাদের এখন হিউস্টনে, জনসন স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। সুনীতা ও বুচ উইলমোরকে বিশেষভাবে মনোযোগ সহকারে চিকিৎসা দেওয়া হবে, কারণ ৯ মাস মহাকাশে থাকার ফলে তাদের শরীরে অনেক ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। মহাকাশের শূন্য ভর পরিবেশে শরীরের পেশি এবং হাড়ের উপর বেশ বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। দীর্ঘ সময় শূন্য ভর পরিবেশে থাকার কারণে মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যেতে পারে এবং সাধারণ কার্যকলাপে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে ফিজিওথেরাপি এবং নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা চলবে।

মহাকাশ স্টেশন থেকে ফেরার পর সুনীতাদের অভিজ্ঞতা শুনে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশে দীর্ঘদিন থাকার পর তাদের শরীরের মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে মাংসপেশি এবং হাড়ের দুর্বলতা থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য কিছু সময় প্রয়োজন। শারীরিক পরীক্ষা শেষে, তাঁদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলবে ৪৫ দিন ধরে। এ সময় তারা মহাকাশ স্টেশনে থাকা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও গবেষণার ফলাফল নিয়ে কথা বলবেন এবং জনসাধারণের কাছে মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরবেন।

এদিকে, সুনীতার পৈতৃক গ্রামে, গুজরাটের মেহসানায়, আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামবাসীরা সুনীতার ফিরে আসাকে অকাল দীপাবলি হিসেবে উদযাপন করেছেন। আতশবাজি ফোটানো, নাচ-গান এবং আনন্দ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে তারা এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করেছেন। সুনীতার জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন, কারণ তিনি শুধু মহাকাশচারী হিসেবে নয়, বরং ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন মহাকাশবিদ হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তার এই দীর্ঘ মহাকাশ অভিযানে তিনি যে সাহসিকতা, পরিশ্রম এবং মানবতা প্রদর্শন করেছেন, তা দেশের জন্য এক অসীম গর্বের বিষয়।

এছাড়া, সুনীতা উইলিয়ামসের পৃথিবীতে ফিরে আসা কেবল তার পরিবারের জন্যই নয়, বরং পুরো ভারতীয় জাতির জন্য একটি অনুপ্রেরণা। মহাকাশ গবেষণা এবং বিজ্ঞানক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি এবং অংশগ্রহণে এটি একটি নতুন অধ্যায়। সুনীতা উইলিয়ামসের মতো মহাকাশচারী শুধু ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানী হিসেবে নয়, পৃথিবীজুড়ে বিজ্ঞানী, গবেষক ও সাধারণ মানুষের কাছে উৎসাহের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁর এই দীর্ঘ অভিযানের পর, মহাকাশের অদেখা দুনিয়ার প্রতি মানুষের কৌতূহল আরও বাড়বে, এবং মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।