১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫—আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ৭৫তম জন্মদিন পালন করছেন। ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের ভদনগরে জন্ম নেওয়া এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজ তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয়। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে রেলস্টেশনে চা বিক্রি করা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী হওয়া পর্যন্ত তাঁর যাত্রা অনন্য এবং অনুপ্রেরণামূলক। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির মাসিক বেতন ₹১.৬৬ লক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে—
মূল বেতন ₹৫০,০০০,
সংসদীয় ভাতা ₹৪৫,০০০,
খরচ বাবদ ₹৩,০০০,
প্রতিদিনের ভাতা ₹২,০০০
আয়কর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মোদির বার্ষিক আয় ২০১৮-১৯ সালে যেখানে ছিল মাত্র ₹১১.১৪ লক্ষ, ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ₹২৩.৫৬ লক্ষ।
২০২৪ সালের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, মোদির মোট সম্পত্তি প্রায় ₹৩ কোটি। এর মধ্যে সর্বাধিক অংশ, প্রায় ₹২.৮৬ কোটি, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ফিক্সড ডিপোজিটে রাখা আছে। নগদ অর্থ হাতে রয়েছে মাত্র ₹৫২,৯২০ এবং দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (গান্ধীনগর ও বারাণসী) রয়েছে সামান্য ₹৮০,০০০।
এছাড়া মোদি বিনিয়োগ করেছেন ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটে ₹৯ লক্ষ এবং লাইফ ইনস্যুরেন্সে ₹২ লক্ষের কম। ব্যক্তিগত গয়নার মধ্যে রয়েছে কেবল চারটি সোনার আংটি, যেগুলির মোট মূল্য প্রায় ₹৩ লক্ষ। উল্লেখযোগ্যভাবে, মোদির নামে কোনো বাড়ি, জমি, গাড়ি বা বাণিজ্যিক সম্পত্তি নেই।
মাত্র আট বছর বয়সে নরেন্দ্র মোদি যোগ দেন আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) জুনিয়র শাখায়। সেখান থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও দর্শনের ভিত গড়ে ওঠে। ২০০১ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাজনৈতিক কেরিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু করেন এবং প্রায় ১৫ বছর সেই পদে বহাল ছিলেন।
২০১৪ সালে তিনি প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ এবং ২০২৪ সালে টানা তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন। তাঁর নেতৃত্বে দেশ পেয়েছে একাধিক বড় প্রকল্প—মেক ইন ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্বচ্ছ ভারত অভিযান। পাশাপাশি নোটবন্দি ও জিএসটির মতো সিদ্ধান্তও এনেছেন যা ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেছে।
আজ ৭৫ বছরে পৌঁছে নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজনীতিতে এক ব্যতিক্রমী অধ্যায়ের নাম। সীমিত সম্পদ, সরল জীবনযাপন এবং দীর্ঘ কর্মনিষ্ঠা তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে আলাদা করে চিহ্নিত করেছে। তাঁর জন্মদিনে দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে শুধু তাঁর রাজনৈতিক কৃতিত্ব নয়, ব্যক্তিগত আর্থিক খতিয়ানও।