কেরালার হাই কোর্ট জানিয়েছে যে, কোনো মুসলিম পুরুষ যদি তার স্ত্রীদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা না রাখে, তাহলে তার একাধিক বিবাহ গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি পি ভি কুণহিকৃষ্ণন এই মন্তব্য করেন, যখন ৩৯ বছর বয়সী একজন মহিলা তার স্বামীকে মাসিক ১০,০০০ টাকা খাদ্য ভাতা দেওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন।
স্বামীর আর্থিক অবস্থা-ভিক্ষাবৃত্তি ও আয়:
মামলাকারী মহিলা পেরিন্থালমান্না এলাকার বাসিন্দা। তার স্বামী ৪৬ বছর বয়সী এবং কুম্বাদি, পালাক্কাদের বাসিন্দা। আদালতে জানানো হয়, তিনি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে আদালত পর্যালোচনা করে দেখেছে, স্বামী বিভিন্ন উৎস থেকে মাসিক প্রায় ২৫,০০০ টাকা আয় করেন, যার মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত।
আদালতের তীক্ষ্ণ মন্তব্য:
বিচারপতি বলেন, মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী একাধিক বিবাহ শুধুমাত্র তখনই বৈধ, যখন পুরুষ তার সকল স্ত্রীকে ন্যায়সঙ্গতভাবে রক্ষা করতে সক্ষম। “একজন ব্যক্তি যদি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ স্ত্রীর প্রতি ন্যায় করতে না পারে, তাহলে অতিরিক্ত বিবাহ গ্রহণযোগ্য নয়।” আদালত আরও বলেন, অধিকাংশ মুসলিম একক বিবাহ পালন করেন, এবং অল্পসংখ্যক শিক্ষাহীন মানুষই বহু বিবাহের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
ভিক্ষাবৃত্তি জীবিকার যোগ্য নয়:
আদালত বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি কোনো জীবিকার উৎস হিসেবে মান্য নয়। রাষ্ট্র, সমাজ ও বিচারব্যবস্থার কর্তব্য হলো নিশ্চিত করা যে কেউ দারিদ্র্য বা অভাবের কারণে ভিক্ষা করতে বাধ্য না হয়। এছাড়াও আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, সমাজ কল্যাণ দফর অভিযুক্ত স্বামীকে যথাযথ পরামর্শ ও ধর্মীয় নেতাদের সহায়তায় শিক্ষা দিক।
সরকারের দায়িত্ব-স্ত্রীদের সুরক্ষা:
খাদ্য ভাতা প্রসঙ্গে আদালত পুনর্ব্যক্ত করেছেন, “ভিক্ষুককে স্ত্রীকে ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া যায় না। তবে সরকার নিশ্চিত করবে যে, স্ত্রীদেরও যথাযথ খাদ্য ও পোশাক দেওয়া হয়।” আদালত উল্লেখ করেছেন যে, এটি দারিদ্র্য, ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় শিক্ষা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব।