দিল্লির বায়ু দূষণ (Delhi Air Pollution) বর্তমান সময়ে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানীর বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) এতটাই খারাপ হয়ে উঠেছে যে, কোথাও কোথাও তা ৫০০-এর গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এই সংকটের মাঝে, দিল্লি সরকার সরকারি কর্মীদের একটি অংশকে বাড়ি থেকে কাজ করার (Work from home) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বুধবার থেকে ৫০ শতাংশ সরকারি কর্মচারী (Delhi government Official) বাড়ি থেকে কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
উত্তর-দক্ষিণবঙ্গে তৈরী শীতের আমেজ, কলকাতায় পারদ পতনের মাঝে কেমন থাকবে আবহাওয়া?
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বুধবার সকালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেছে যে, আমাদের নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বিপজ্জনক। তাই, ৫০ শতাংশ সরকারি কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” মন্ত্রী আরও জানান, এটি শুধুমাত্র একটি সাময়িক ব্যবস্থা, তবে যতদিন না বায়ু মানের পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে, ততদিন এই পদক্ষেপ চলতে থাকবে।
দূষণ কমানোর এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল, অফিস থেকে আসা-যাওয়ার ফলে যে পরিমাণ যানবাহন চলাচল করে, তার কারণে হওয়া বায়ু দূষণের পরিমাণ কমানো। মন্ত্রী জানান, এই উদ্যোগের ফলে কমবে যানবাহনের সংখ্যা, যা অবশেষে শহরের বায়ু মানের উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে।
দিল্লির নাগরিকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে উদ্বেগ বেড়ে গেছে। শহরের বাসিন্দারা প্রায়ই বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা অনুভব করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিনের এই দূষণজনিত সমস্যার কারণে শিশুদের এবং বয়স্কদের স্বাস্থ্য আরও গুরুতরভাবে প্রভাবিত হতে পারে। এর ফলে, প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে একটি জরুরি প্রয়োজন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি বিরোধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বড় সিদ্ধান্ত, হিন্দু পক্ষের দাবি প্রত্যাখ্যান
এদিকে, সরকারের নতুন নির্দেশনার বিরুদ্ধে কিছু রাজনৈতিক দলের সমালোচনা হয়েছে। বিরোধী দলগুলি দাবি করেছে যে, সরকারের উচিত ছিল আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যেমন: নির্মাণ কাজ ও অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে দূষণের মাত্রা কমানো যায়। তাদের মতে, বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ শুধু একটি সাময়িক সমাধান, যা সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট নয়।
দূষণের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে দিল্লি সরকার কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও ঘোষণা করেছে। পরিবেশ মন্ত্রী বলেছেন, “আমরা পরিকল্পনা করছি শহরের বিভিন্ন স্থানে গাছপালার সংখ্যা বাড়াতে। পাশাপাশি, পুরানো যানবাহনগুলিকে ধীরে ধীরে রাস্তায় বের হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” মন্ত্রী আরও যোগ করেন যে, সরকার বিভিন্ন সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করবে, যাতে তারা দূষণের বিরুদ্ধে সচেতন হন এবং নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারেন।
উত্তর-দক্ষিণবঙ্গে তৈরী শীতের আমেজ, কলকাতায় পারদ পতনের মাঝে কেমন থাকবে আবহাওয়া?
সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজের সিদ্ধান্তের ফলে অফিসের কাজের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাড়ি থেকে ভার্চুয়াল মিটিং এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এভাবে, কাজের গতি বজায় রাখতে সক্ষম হবেন এবং দূষণ কমানোর লক্ষ্যেও অবদান রাখতে পারবেন।
সার্বিকভাবে, দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা খুবই জরুরি। এখন দেখার বিষয় হল, এই নতুন উদ্যোগ কার্যকরী হতে পারে কি না এবং কতদিনের মধ্যে শহরের বাতাসের গুণমান উন্নতির দিকে যাবে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।