দেশের ৩৩ লক্ষেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, স্বীকার করল মোদি সরকার

News Desk: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের ব্যর্থতায় দেশে ৩৩ লক্ষেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে (malnutrition) ভুগছে। এই শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গুরুতর অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির শিকার…

malnutrition

News Desk: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের ব্যর্থতায় দেশে ৩৩ লক্ষেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে (malnutrition) ভুগছে। এই শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গুরুতর অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির শিকার হওয়া শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু রয়েছে মহারাষ্ট্রে (Maharashtra)। তার পরেই রয়েছে যথাক্রমে বিহার(Bihar) ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাত (Gujrat)। কেন্দ্রের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক চাঞ্চল্যকর এই পরিসংখ্যানের কথা স্বীকার করে নিয়েছে।

দেড় ছরেরও বেশি সময় দেশ তীব্র করোনার আতঙ্কে ভুগছে। করোনা জনিত কারণে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অনেকের রোজকার কমে অর্ধেক হয়েছে। মানুষের আয় কমলেও লাফিয়ে বেড়েছে সংসার প্রতি পালনের খরচ। কারণ প্রতিটি জিনিসের মূল্য আকাশছোঁয়া। এই পরিস্থিতির জন্যই দেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে বলে কেন্দ্র জানিয়েছে। তথ্য জানার অধিকার আইনে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ ( women and child development ministry) মন্ত্রকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল।

ওই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রক জানিয়েছে দেশের ৩৪ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলে ৩৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৩৬২টি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এই শিশুদের মধ্যে ১৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯০২টি শিশু গুরুতর অপুষ্টির শিকার। অন্যদিকে ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪২০ টি শিশু মাঝরি মানের অপুষ্টিতে ভুগছে। করোনাজনিত এই সঙ্কটকালে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি আরও বাড়তে পারে বলেই কেন্দ্রের আশঙ্কা।

দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিসংখ্যান যথেষ্টই উদ্বেগজনক। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের তুলনায় চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত গুরুতর অপুষ্টির শিকার হওয়া শিশুদের সংখ্যা প্রায় ৯১ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০-র নভেম্বর পর্যন্ত দেশে গুরুতর অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা ছিল ৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০৬ জন। কিন্তু চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যেই সেটা ১৭ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

‘চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সিইও পূজা মারওয়াহা (Puja Marwaha) বলেছেন, করোনাজনিত মহামারী আর্থ-সামাজিক দিক থেকে প্রবল আঘাত হেনেছে। যে কারণে পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। গত দেড় বছরে দেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। গত এক দশকে আমরা যতটা উন্নতি করতে পেরেছিলাম দেড় বছরে তার চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় মিড ডে মিলও পাচ্ছে না দরিদ্র শিশুরা। মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু শিশুর আরও কষ্টে পড়েছে। অশোক জৈন (Ashok Jain) নামে দিল্লির এক চিকিৎসক বলেন, অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও কমবে। ফলে এই সমস্ত শিশুদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আরও বাড়বে। কারণ অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাবে।

উল্লেখ্য, গত মাসেই বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত অনেকটাই পিছনের দিকে চলে গিয়েছে। এমনকী, ভারতের চেয়ে নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তানও অনেক উপরের দিকে ঠাঁই পেয়েছে। সে সময় অবশ্য কেন্দ্র ওই তালিকা তৈরির পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের ওই তালিকাক্রম যে ভুল নয়, কেন্দ্রের কথায় সেটাই প্রমাণ হল। কারণ এবার কেন্দ্রীয় সরকারের এক মন্ত্রকই জানাল, দেশে অপুষ্টিজনিত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে।