ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে প্রতি রাখিতে নিজ হাতে বানানো রাখি বেঁধে আসছেন এক বিশেষ ‘বোন’। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। করাচি-জন্মা কামের মোহসিন শেখ ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছেন দু’টি রাখি-একটিতে ‘ওঁ’, অন্যটিতে শোভা পাচ্ছে গজানন। এখন শুধু অপেক্ষা, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আমন্ত্রণ কবে আসে (Modi’s ‘Pakistani sister’ prepares rakhi)।
১৯৮১ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে আসেন কামের, বিবাহসূত্রে। তখনই শুরু হয় তাঁর নতুন জীবনের পথচলা। তবে এই গল্প কেবল প্রবাস, পরিবার কিংবা পাসপোর্টের নয়, এ এক আত্মিক সম্পর্কের ইতিহাস। গত প্রায় তিন দশক ধরে তিনি রাখির দিন প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে রাখি বেঁধে এসেছেন। আর সেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক সাদামাটা মুহূর্তে—আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবক থাকা অবস্থায় একদিন মোদী কামেরকে শুধুই জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আপনি কেমন আছেন?”
সেই এক বিনিময়ে গড়ে ওঠে এক অনন্য ভাই-বোনের বন্ধন। সম্পর্কের গভীরতা এমন যে, একবার কামের প্রার্থনা করেছিলেন মোদী যেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হন। পরে তা সত্যি হলে মোদী নিজেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, “এবার কী আশীর্বাদ দেবেন?” কামের বলেন, “তখনই বলেছিলাম, আপনি যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন।”
আজ মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে তৃতীয়বার। কামেরের কাছে সেটাই তাঁর আশীর্বাদের পরিপূর্ণতা। তিনি বলেন, “প্রতি বছরই রাখির দিন আমি নিজের হাতে রাখি বানাই। কখনও বাজারের রাখি ব্যবহার করিনি। ওতে হৃদয়ের স্পর্শ থাকে না। আমার তৈরি রাখির মধ্যেই আছে ভক্তি, প্রার্থনা, ভালোবাসা।”
২০২৪ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে দিল্লি যেতে পারেননি। কিন্তু এই বছর তিনি আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আমন্ত্রণ এলে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি যাবেন এবং ফের সেই বহু বছরের পরম্পরাকে ধরে রাখবেন।
শেষে কামের বলেন, “আমি শুধু চাই উনি সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবী হোন, দেশের সেবা করে চলুন। আমার প্রার্থনা—দেশের মানুষ যেন তাঁকে আরও একবার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসান।”
রাজনীতির প্রটোকলের বাইরে এমন এক আত্মিক সম্পর্কের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, রাষ্ট্রনায়কের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে মানুষের হৃদয়। যেখানে রাখির সুতোয় বাঁধা থাকে বিশ্বাস, শ্রদ্ধা আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।