প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi Trump) এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সবসময়ই একটি দৃঢ় ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।
এই মন্তব্য এসেছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর (Modi Trump) সাম্প্রতিক বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরে, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে তিনি ট্রাম্পের ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ইতিবাচক মূল্যায়নকে “গভীরভাবে প্রশংসা করেন এবং সম্পূর্ণভাবে পারস্পরিকভাবে সমর্থন করেন”।ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে।
বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের (Modi Trump) নেতৃত্বে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। জয়শঙ্কর তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, এই সম্পর্ক শুধুমাত্র দুই দেশের নেতাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর নির্ভর করে না, বরং উভয় দেশের স্বার্থ এবং পারস্পরিক লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী সবসময়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব হিসেবে দেখেন, যা বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি উচ্চ-প্রোফাইল সাক্ষাতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।
২০১৯ সালে ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় ‘নমস্তে ট্রাম্প’ (Modi Trump) অনুষ্ঠান এবং ২০২০ সালে মোদীর মার্কিন সফরের সময় ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠান এই সম্পর্কের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই দুটি ঐতিহাসিক ঘটনা দুই দেশের মধ্যে জনগণের স্তরে সম্পর্কের গভীরতা এবং উষ্ণতা প্রদর্শন করেছে। জয়শঙ্কর এই প্রসঙ্গে বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ শুধুমাত্র দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সম্পর্ককে শক্তিশালী করেনি, বরং জনগণের মধ্যেও একটি সেতু তৈরি করেছে।”
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কও ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে । ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের পরিমাণ গত দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্য খাতে দুই দেশের সহযোগিতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। জয়শঙ্কর উল্লেখ করেন যে, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক এখন শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক স্তরে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতার একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ এবং স্বাস্থ্য সংকটের মতো বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। এই অংশীদারিত্ব বিশ্বের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।”মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা শুধুমাত্র কূটনৈতিক স্তরে নয়, ব্যক্তিগত স্তরেও লক্ষণীয়। ট্রাম্প বারবার মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন এবং ভারতের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অগ্রগতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, মোদিও ট্রাম্পের (Modi Trump) সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জয়শঙ্কর এই প্রসঙ্গে বলেন, “দুই নেতার মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি। এটি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে।”
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী জয়শঙ্কর বলেন, আগামী দিনে এই অংশীদারিত্ব আরও নতুন ক্ষেত্রে প্রসারিত হবে। তিনি বিশেষভাবে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনার উপর জোর দেন।
এছাড়াও, তিনি বলেন যে ভারত ও মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করছে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
শেষে, জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন যে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কেবল দুই দেশের জন্যই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি ইতিবাচক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, “এই সম্পর্ক শুধুমাত্র আমাদের দুই দেশের জনগণের জন্য নয়, বরং বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে জয়শঙ্কর ভারত-মার্কিন সম্পর্কের গুরুত্ব এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করেন।