নয়াদিল্লি, ৫ ডিসেম্বর: আজ দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসের সামনে বয়ে গেল বন্ধুত্বের হওয়া (Modi free e-tourist visa)। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাসিমুখে ঘোষণা করলেন, “আমি খুব খুশি যে খুব শিগগিরই আমরা রুশ নাগরিকদের জন্য ৩০ দিনের ই-টুরিস্ট ভিসা এবং গ্রুপ টুরিস্ট ভিসা সার্ভিস চালু করতে চলেছি এবং সবচেয়ে বড় কথা, এটা হবে সম্পূর্ণ ফ্রি!”
এই একটি বাক্যে যেন হাজার হাজার রুশ পর্যটকের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়া হলো।কয়েক বছর আগেও রাশিয়া থেকে ভারতে আসা পর্যটকের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০-৯০ হাজারের আশেপাশে। কোভিডের পর সেই সংখ্যা বেড়ে প্রায় দেড় লক্ষ হয়েছে, কিন্তু এখনও রুশদের প্রথম পছন্দ তুরস্ক, মিশর কিংবা থাইল্যান্ড। মোদীর এই ঘোষণার পর ট্রাভেল এজেন্টরা বলছেন, ২০২৬-এর মধ্যে রুশ পর্যটকের সংখ্যা ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট হিড়িক, ভাইরাল ভিডিওতে পদপিষ্টের পরিস্থিতি
গোয়ার হোটেল মালিকরা তো এখন থেকেই রুশ মেনু তৈরি শুরু করে দিয়েছেন বোর্শ, পেলমেনি আর ব্লিনি দিয়ে!কিন্তু শুধু পর্যটন নয়, মোদি-পুতিন আলোচনায় মানুষে-মানুষে যোগাযোগের আরও অনেক দরজা খুলে গেল। প্রধানমন্ত্রী বললেন, “আমরা দুই দেশের ছাত্র-ছাত্রী, পণ্ডিত, ক্রীড়াবিদদের মধ্যে বিনিময় বাড়াব। ভোকেশনাল এডুকেশন, স্কিলিং এবং ট্রেনিং-এ একসঙ্গে কাজ করব।”
এর মানে, রাশিয়ার টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভারতীয় ছাত্রদের সিট বাড়বে, আর ভারতের আইটিআই-তে রুশ প্রশিক্ষক আসবেন। খেলাধুলায়ও নতুন সম্ভাবনা রাশিয়ান জিমন্যাস্টরা কেরল বা হরিয়ানায় ট্রেনিং ক্যাম্প করবে, আর ভারতীয় কুস্তিগীররা দাগেস্তানে যাবে।এই ঘোষণার পেছনে একটা মানবিক গল্পও আছে।
গত বছর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশরা ইউরোপে যেতে পারছেন না। ফলে গোয়া, কেরালা, রাজস্থানে রুশ পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। অনেকে এসে মাসের পর মাস থেকে যাচ্ছেন। কেরলের ভার্কালা বিচে এখন রুশ ভাষায় সাইনবোর্ড, রুশ রেস্তোরাঁ আর রুশ যোগা স্কুল। মোদি যেন সেই বাস্তবতাকেই আনুষ্ঠানিক রূপ দিলেন।
আজকের বৈঠকে আরও কিছু মজার চুক্তি হয়েছে। রাশিয়ার কালুগায় ভারতীয় কোম্পানি ওষুধ কারখানা খুলবে। কুডাঙ্কুলামে নতুন দুটো নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের কাজ শুরু হবে। আর চেন্নাই-ভ্লাদিভোস্টক শিপিং রুটে আরও বেশি জাহাজ চলবে। কিন্তু যে কথাটা সবচেয়ে বেশি মানুষের মনে থাকবে, সেটা হলো সেই ফ্রি ভিসা।

