অপারেশন সিঁদুরের পর আবার ও মক ড্রিলের ঘোষণা কেন্দ্রের

অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) পর ভারত সরকার আবারও একটি মক ড্রিলের ঘোষণা করেছে, যা এবার শুধুমাত্র পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে অনুষ্ঠিত হবে। এই ড্রিলের লক্ষ্য হল জাতীয়…

operation-sindoor second mock drill

অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) পর ভারত সরকার আবারও একটি মক ড্রিলের ঘোষণা করেছে, যা এবার শুধুমাত্র পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে অনুষ্ঠিত হবে। এই ড্রিলের লক্ষ্য হল জাতীয় নিরাপত্তা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও জনগণের প্রস্তুতি পরীক্ষা করা। জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, গুজরাট এবং রাজস্থানের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে এই মক ড্রিল ২৯ মে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে বলে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ প্রকাশিত পোস্টে জানা গেছে।

অপারেশন সিঁদুর (operation-sindoor)

অপারেশন সিঁদুর, (operation-sindoor) যা গত ৭ মে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছিল, পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের মৃত্যুর কারণ হওয়া জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে শুরু হয়। এই অপারেশন ভারতীয় বায়ুসেনার দক্ষতা এবং পরিকল্পনার প্রমাণ দিয়েছে, যেখানে তারা পাকিস্তানের চীন-সরবরাহিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নিষ্ক্রিয় করে মাত্র ২৩ মিনিটে মিশন সম্পন্ন করে। এই সফল অপারেশনের (operation-sindoor)পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, এবং দুই দেশের মধ্যে তীব্র সামরিক সংঘর্ষের পর ১০ মে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

   

 কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ড্রিলের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকায় নাগরিক প্রতিরক্ষা এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে চায়। এই ড্রিলে শহরগুলিতে আলো নিভিয়ে দেওয়া, এয়ার রেইড সাইরেন বাজানো, আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া এবং জরুরি দলগুলির বাস্তব সময়ে কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ভারতের দ্বিতীয় বড় মক ড্রিল

এটি অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) পর ভারতের দ্বিতীয় বড় মক ড্রিল, যা সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। কারণ ভারত পাকিস্তান সীমান্তবর্তী উত্তেজনার সময়ে দেখা গেছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্য গুলিতে ব্যাপক পরিমান ড্রোন হামলার চেষ্টা করে। এবং এই মক ড্রিল তাৎপর্য পূর্ণ এই কারণে, কেননা পাকিস্তানের সেনা বাহিনী সীমান্তবর্তী রাজ্যের সাধারণ মানুষের উপর হামলার ছক কষেছিল।

৭ মে অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) দিন প্রথম মক ড্রিল পরিচালিত হয়েছিল, যা পহেলগাঁও হামলার পর জরুরি প্রস্তুতির অংশ ছিল। এবারের ড্রিলটি আরও নির্দিষ্টভাবে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, কারণ এই এলাকাগুলি জঙ্গি হামলা এবং সীমান্ত সংঘর্ষের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত পোস্ট অনুসারে, জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং গুজরাটে এই ড্রিলের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদী বলেন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor)পর পাঞ্জাবের আদমপুর এয়ারবেসে সেনা সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতে বলেন, “অপারেশন সিঁদুর শেষ হয়নি তা এখনো চলছে এবং চলবে”। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট লক্ষ্মণরেখা টেনেছি।” তিনি আরও বলেন, ভারত “কোনো পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল সহ্য করবে না” এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, মক ড্রিলের ঘোষণা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি এবং সম্ভাব্য হুমকির জন্য প্রস্তুতি জোরদার করার ইঙ্গিত দেয়।

মেজর জেনারেল কার্তিক সেশাদ্রি, ১৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি, পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, “অপারেশন সিঁদুর কেবল স্থগিত করা হয়েছে, শেষ হয়নি। এর ভয়ংকর রূপ এখনও বাকি।” এই বক্তব্য সীমান্তে উত্তেজনা এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ সংঘর্ষের আশঙ্কাকে আরও জোরদার করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে মক ড্রিল জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা এবং নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisements

“সহজ হবে না”! ইংল্যান্ড সফরের আগে গিলকে সতর্কবাণী প্রাক্তন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের

কারা অংশ নেবেন

এই ড্রিলে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স ইউনিট এবং জরুরি পরিষেবা দলগুলি অংশ নেবে। গুজরাটের একটি সংবাদ সূত্র জানায়, এই ড্রিলে এয়ার রেইড সাইরেন এবং ব্ল্যাকআউটের মতো বাস্তবসম্মত পরিস্থিতি তৈরি করা হবে। জম্মু ও কাশ্মীরে, যেখানে সীমান্ত সংঘর্ষের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে নাগরিকদের আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করেছে।

২৫টি দেশে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল

অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) পর ভারত বিশ্ব মঞ্চে তার অবস্থান জোরদার করতে ২৫টি দেশে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। এই কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান তুলে ধরেছে। এই প্রেক্ষাপটে, মক ড্রিলগুলি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ অবশ্য অপারেশন সিঁদুরকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বিশেষত শশি থারুরের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, থারুর সরকারের পক্ষে কথা বলছেন, যা কংগ্রেসের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে, সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই মক ড্রিলগুলি জনগণের নিরাপত্তা এবং সামরিক প্রস্তুতির উপর জোর দেয়।

নাগপুর বিমানবন্দরে ইতিমধ্যে মক ড্রিল পরিচালিত

নাগপুর বিমানবন্দরে ইতিমধ্যে সিআইএসএফ এবং বিমানবন্দর কর্মীদের নিয়ে একটি মক ড্রিল পরিচালিত হয়েছে। এই ড্রিলগুলি সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা পরীক্ষা করার জন্যও প্রসারিত হবে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ড্রিল সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে জরুরি প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন, আবার কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এটি সীমান্তে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিতে পারে।

এই মক ড্রিল ভারতের নিরাপত্তা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অপারেশন সিঁদুরের (operation-sindoor) পর পাকিস্তানের সামরিক ক্ষয়ক্ষতি এবং ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য দেশের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। তবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যৎ হুমকির জন্য প্রস্তুত থাকতে এই ড্রিলগুলি অপরিহার্য।