Omicron ডেল্টার চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক স্বীকার করল স্বাস্থ্যমন্ত্রক

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বই করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন (omicron) নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে। ভারতও (india) তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে…

Omicron india

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বই করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন (omicron) নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে। ভারতও (india) তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ওমিক্রনের হদিশ মিলেছে।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস (trinamul congress) সাংসদ সৌগত রায় (sougata roy) জানতে চান, এখনও পর্যন্ত দেশের কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কি করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে? ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট কি ডেল্টা ভেরিয়েন্টের থেকে অনেক বেশি সংক্রামক এবং প্রাণঘাতী? করোনার টিকা নেওয়ার পরেও কি মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছে? এই সংক্রামক ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে কেন্দ্র কি পরিকল্পনা নিয়েছে? ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট প্রতিরোধ করতে সরকার কি আন্তর্জাতিক পর্যটন বন্ধ করার কথা ভাবছে?

একইসঙ্গে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা এবং তাদের উপর নজরদারি চালানোর জন্য কি বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে? ওমিক্রন ঠেকাতে সরকার কি নতুন কোনও ভ্যাকসিনের কথা চিন্তা ভাবনা করছে? সরকার কি জিনোম সিকোয়েন্সিং সেন্টার বাড়ানোর কথা ভাবছে। ওমিক্রন কি আরটি-পিসিআর টেস্টে ধরা পড়ে?

তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের এই সব প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার জানিয়েছেন, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৮১ জন ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট আক্রান্ত হয়েছেন। তবে মৃত্যুর কোন খবর নেই। সবচেয়ে বেশি ৩২ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। এরপরই রয়েছে রাজস্থান ১৭, দিল্লি ও কর্নাটকে ৮ জন করে, গুজরাত ও কেরলে পাঁচজন করে, তেলেঙ্গানায় দু’জন, অন্ধ্রপ্রদেশ, চণ্ডীগড়, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গে একজন করে ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।

মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই নতুন ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও যে সমস্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে তার ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক। তবে এই ভাইরাস ডেল্টার তুলনায় প্রাণঘাতী কিছুটা কম। আরটি-পিসিআর টেস্টের মাধ্যমেও ওমিক্রন আক্রান্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ওমিক্রন প্রতিরোধ করতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সমস্ত দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে কেউ আসলে সেই সমস্ত যাত্রীদের কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। ওমিক্রন প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরেই আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। আট দিন পর তাঁদের আবারও আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে। সেই টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই তাঁরা প্রকাশ্যে আসার অনুমতি পাচ্ছেন। একইসঙ্গে যে সমস্ত যাত্রীরা অন্য কোনও সাধারণ দেশ থেকে দেশে ফিরছেন তাঁদের মধ্যে ২ শতাংশ যাত্রীর রানডম করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পরীক্ষায় কেউ করোনা পজিটিভ হলে তাঁর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা, তাঁদের গতিবিধি ও স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক দফতরকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক নিয়মিত প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ যাতে কোনওভাবেই ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা এবং তাঁরা যে সমস্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন তাদের দ্রুত চিহ্নিত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি করোনা পরীক্ষা এবং টিকাকরণের হার বাড়ানোর উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।