কটক: রুজিরুটির জন্য নিত্য সংগ্রামও কেড়ে নিতে পারল না চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন। ওড়িশার পরিযায়ী শ্রমিক ছাত্রের NEET জয় গড়ল ইতিহাস। কাজের তাগিদে খুরদা জেলার বানপুর ব্লকের মুদুলিঢিয়া গ্রামের লড়াকু ছেলে সুভম সবর বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের কাজ করে। ছোট্ট গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলে সুভম মাত্র ১৯ বছর বয়সে স্থানীয় এক দালালের হাত ধরে পাড়ি দেয় ভিনরাজ্যে, কিছু অর্থ উপার্জনের আশায়। কিন্তু অদম্য জেদ আর অধ্যাবসায় ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিল।
সর্বভারতীয় ডাক্তারি পরীক্ষায় (NEET UG) ১৮,২১২ র্যাঙ্ক অর্জন করে উড়িষ্যার বহরমপুরের এমকেসিজি (MKCG) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হল সুভম। সংবাদসংস্থাকে সে জানায়, “বেঙ্গালুরুর একটি নির্মাণ সাইটে কাজের সময় আমার শিক্ষকের ফোন আসে। মিষ্টি বিতরণ করতে বলেন তিনি। আমি তো প্রথমে অবাক হই। তারপর উনি জানান যে আমি NEET UG পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি”। সংবাদ পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি শুভম। এ যেন “স্বপ্ন সত্যি হল” বলে উল্লেখ করেন তিনি। তারপর দালালের অনুমতি নিয়ে পরদিন বাড়ি ফেরে সে।
সুভমের মা রঙ্গি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ও খুব কর্মঠ আর মেধাবী। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। ওর অধ্যাবসায় আর কঠোর পরিশ্রম সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছে”। তিনি আরও বলেন, “ছোটবেলা থেকেই সুভম ওর বাবা-মা, ভাইবোনদের দিনরাত পরিশ্রম করতে দেখেছে। কঠোর পরিশ্রমের ফল যে একদিন ঠিক পাওয়া যায়, ও তা জানে”। NEET UG পরীক্ষা দেওয়ার পর পরিবারকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করতে বেঙ্গালুরুতে লেবারের কাজে গিয়েছিল সুভম। সেখানে ৩ মাসে ৪৫ হাজার টাকা উপার্জন করে কলেজে ভর্তির জন্য ২৫ হাজার টাকা সঞ্চয়ও করে রেখেছে সে।
পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant Labour) হিসেবে বেঙ্গালুরু যাওয়ার কারণের জবাবে হাসি মুখে সে জানায়, “আমি খুব দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়াতেই ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে বাধ্য হই। এবার ডাক্তার হয়ে আমি উড়িষ্যার মানুষের সেবায় ব্রতী হতে চাই”। সুভমের বাবা সহদেব সবর এবং মা রঙ্গি সবরের আশা, সুভমের ৫ বছরের ডাক্তারি পড়াশুনোয় সরকার সাহায্য করবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
