জম্মু-কাশ্মীরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ মোদী সরকারের ধর্মীয় পর্যটন নীতি। এমনই কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন মু়খ্যমন্ত্রী (mehbooba mufti) মেহবুবা মুফতি। রাজ্য মর্যাদা থাকাকালীন তিনি জম্মু-কাশ্মীরের শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এটি এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি জম্মু-কাশ্মীরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমাদের সরকার জমি, বন এবং নদীগুলো সামান্য মূল্যে ঠিকাদারদের হাতে তুলে দিয়েছে। যেভাবে খুশি, সেভাবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।”
মেহবুবা আরও বলেন, “ওরা বোঝে না যে ঈশ্বর কেন নিজের বাসস্থানের জন্য উঁচু পাহাড় আর বনভূমির নির্জন স্থান বেছে নিয়েছিলেন। এগুলো মন্দিরের মতো পবিত্র স্থান, যেখানে মানুষ ৩-৪ মাস প্রস্তুতি নিয়ে যায়। এখন এসব স্থানকে পিকনিক স্পট বানিয়ে ফেলা হয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “চারধাম যাত্রার জন্য উত্তরাখণ্ডে এত রাস্তা তৈরি করা হয়েছে যে আজ তার মধ্যে দুটি ধাম বন্ধ হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমৃতসর-কটরা ছয় লেনের হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে। এর জন্যও গাছ কাটা হবে। কটরায় মানুষের জীবিকা কেড়ে নিয়ে রোপওয়ে (রশির সাহায্যে চলা বাহন) তৈরি করা হচ্ছে, সেটির জন্যও অনেক গাছ কাটতে হবে।”
মেহবুবা মুফতি বলেন, “যতক্ষণ না আমরা, এখানকার সাধারণ মানুষ, জাগব এবং ওদের (সরকারকে) থামাব, ততক্ষণ ওরা থামবে না। সুপ্রিম কোর্ট এবং পরিবেশ আদালত (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল) পর্যন্ত ওদের থামাতে ব্যর্থ হয়েছে।”
মেহবুবা মুফতি বৃহস্পতিবার জম্মুতে বন্যায় সৃষ্ট ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিস্তৃত ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জীবনের পুনর্গঠনের জন্য “কোটি কোটি টাকা” প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “জম্মুকে পুনর্নির্মাণ করতে হবে। বিজেপির যেসব বিধায়ক জনগণের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পেয়েছেন, তাদের উচিত কেন্দ্রকে চাপ দেওয়া যেন তারা ‘নতুন জম্মু’ গড়তে বড় মাপের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে।”
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা বলেন, “২০১৪ সালের বন্যার মতো একটি বড় প্যাকেজ ঘোষণা করা দরকার। এটি বিজেপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, যারা নিজেদের ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’ বলে দাবি করে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান প্রশাসনেরও উচিত কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি বিস্তৃত আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার জন্য চাপ দেওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে সম্পূর্ণভাবে দাঁড়ানো।”
তিনি বলেন, “একটি জরুরি ত্রাণ প্যাকেজ প্রয়োজন, যা সব শ্রেণির মানুষ সাধারণ পরিবার, কৃষক, ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করবে। কারণ, সম্পত্তি, ফসল, গবাদি পশু এবং জীবিকার যে ক্ষতি হয়েছে তা বিপুল।”