‘সন্দেহের বশে নির্দোষদের শাস্তি দেবেন না’! দিল্লি বিস্ফোরণে মুফতি

mehbooba-mufti-delhi-blast-fair-investigation-innocent-families

নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বরঃ দিল্লির লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের পর যখন রাজধানীজুড়ে তদন্ত চলছে, তখন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি (PDP) প্রধান মেহবুবা মুফতি দিলেন বিতর্কিত বার্তা। তিনি বলেছেন “দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন, কিন্তু সন্দেহের বশে নির্দোষদের শাস্তি দেবেন না।”

Advertisements

মঙ্গলবার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেহবুবা বলেন, “দিল্লিতে যা ঘটেছে, তার যন্ত্রণা আমরা খুব কাছ থেকে অনুভব করতে পারি, কারণ কাশ্মীর বহু বছর ধরে রক্তক্ষয়ী ঘটনার সাক্ষী। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি তদন্ত যেন দ্রুত এবং ন্যায়সঙ্গত হয়।”

   

নাশকতার হুমকিতে পাঁচ এয়ারপোর্টে জারি হাই অ্যালার্ট

তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনায় যাঁরা সত্যিই দোষী, তাঁদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের, যারা কোনো অপরাধে জড়িত নয়, তাঁদের যেন সন্দেহের বশে গ্রেফতার না করা হয়। মায়েরা, বাবারা, ভাই-বোনদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এটা গণতন্ত্রে মানায় না।”

মেহবুবা মুফতির মতে, তদন্তের নামে নিরপরাধ মানুষদের আতঙ্কে রাখা উচিত নয়। তাঁর কথায়, “তদন্ত মানে তদন্ত রায় নয়। দোষ প্রমাণের আগেই যদি পরিবারের সবাইকে অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়, তা অত্যন্ত অন্যায়।” তিনি বলেন, “দিল্লির যেসব পরিবার এই ভয়াবহ ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি গভীর সহানুভূতি জানাই। আমি জানি, তাঁদের এখন কেমন লাগছে। কিন্তু পাশাপাশি, যাদের পরিবারের কেউ অভিযুক্ত হয়েছে, তারাও ভয় এবং লজ্জার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সরকারকে এই দুই দিকই বুঝতে হবে।”

Advertisements

দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে তদন্ত এখন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির হাতে। NIA ও দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন কাশ্মীরের পুলওয়ামা এলাকার বাসিন্দা।

মেহবুবা মুফতির মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, তাঁর এই বক্তব্য কাশ্মীরি পরিবারের মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, আবার অনেকেই বলছেন, এই মন্তব্য তদন্তের গতিকে প্রভাবিত করতে পারে।

এক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথায়, “মেহবুবা মুফতি মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে মানবিক বার্তা দিচ্ছেন — যেন আইন নিজের পথে চলে, কিন্তু মানুষের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ না হয়।” তবে কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি, “তদন্তে কোনো নিরপরাধকে হয়রানির প্রশ্নই আসে না। সব গ্রেফতারই প্রমাণের ভিত্তিতে হচ্ছে।”

এই বিস্ফোরণে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে অন্তত দুই জনের, আহত হয়েছেন এক ডজনেরও বেশি। দিল্লির পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র, যার মাধ্যমে নেপথ্যের সংগঠন বা চক্রের হদিস মিলতে পারে। দেশের বিভিন্ন অংশে এই ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রো স্টেশন, বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবনগুলিতে চলছে কড়া নজরদারি।