ভারত-মার্কিন নবশুল্ক নীতি: বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বড় পদক্ষেপ

Markets Cheer Trump-Modi’s Fresh Tariff Approach Amid Trade Deal Progres

কয়েক সপ্তাহের টানাপোড়েন ও কূটনৈতিক অস্থিরতার পর অবশেষে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় নতুন গতি এসেছে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (Tariff) নিয়ে একাধিক দফা আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক বিবৃতিতে আশাপ্রকাশ করেছেন যে, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই পারস্পরিক স্বার্থে উপযোগী একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাবে।

Advertisements

এই আশাবাদী বার্তাটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম -এ ভারতকে নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন। দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ঠান্ডা লড়াইয়ের পর এই নতুন উদ্যোগ বাজারে স্বস্তির হাওয়া বইয়ে দিয়েছে।

সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপট

গত কয়েক মাস ধরে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে মতবিরোধ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম এবং তথ্য প্রযুক্তি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক (Tariff) চাপায়, অপরদিকে ভারতও পাল্টা কিছু আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে দেয়।

এই দ্বন্দ্বের ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়ে। এমনকি দুই দেশের নেতারা প্রকাশ্যে একে অপরকে উদ্দেশ্য করে কঠোর মন্তব্যও করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বৈঠক ও আলোচনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠে আবারও উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে হাঁটছে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন।

ট্রাম্পের বার্তা এবং মোদীর প্রতিক্রিয়া

ডোনাল্ড ট্রাম্প  একটি পোস্টে লেখেন: “আমরা ভারতের সঙ্গে ন্যায্য ও কার্যকর বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বাজার ও বিনিয়োগকারীরা এই নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক ঐতিহাসিক। পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা খুব শিগগিরই ইতিবাচক ফলাফল দেখতে পাব।”

বাজারের প্রতিক্রিয়া

Advertisements

এই নতুন উদ্যোগের ফলে ভারতীয় শেয়ার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সোমবার সেনসেক্স এবং নিফটি উভয়ই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রেখেছে।

সেনসেক্স প্রায় ৫৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৭৯,২০০-এর ঘরে পৌঁছেছে।
নিফটি ১৮০ পয়েন্ট বেড়ে ২৪,২৫০-এ পৌঁছেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উন্নয়ন বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। যেহেতু ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই একে অপরের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার, তাই একটি নতুন চুক্তি হলে উভয় দেশের অর্থনীতিই লাভবান হবে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই চুক্তি হলে একাধিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে:

1. রপ্তানি ও আমদানির ভারসাম্য — ভারতীয় আইটি সেক্টর, ওষুধ শিল্প এবং কৃষিজ পণ্যের জন্য নতুন বাজার তৈরি হবে।
2. শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা — স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং প্রযুক্তিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক কমতে পারে।
3. বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়বে — মার্কিন বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় বাজারে আরও বড় আকারে প্রবেশ করতে পারবেন।
4. স্টার্টআপ ও প্রযুক্তি খাতের উন্নতি — প্রযুক্তি খাতের জন্য যৌথ উদ্যোগ এবং গবেষণা সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে