‘মোহনা’র টানে পাকিস্তান থেকে ছুটে এসেছিলেন তাঁর বাল্যবন্ধু!

manmohan reunion childhood friend নয়াদিল্লি: সাল ২০০৮৷ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে এলেন বিশেষ অতিথি৷ গন্তব্য দিল্লি৷ উদ্দেশ্য ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করা৷ সেই বন্ধু…

manmohan reunion childhood friend

manmohan reunion childhood friend

নয়াদিল্লি: সাল ২০০৮৷ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে এলেন বিশেষ অতিথি৷ গন্তব্য দিল্লি৷ উদ্দেশ্য ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করা৷ সেই বন্ধু আর কেউ নন, ছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ যিনি শুধু প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, ছিলেন দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের অন্যতম স্থপতি৷ বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৯২ বছরের অর্থনীতিবিদ৷ তাঁর প্রয়াণে সামনে ভেসে উঠেছে বহু স্মৃতি৷ আলোচনায় নানা ঘটনা৷ আরও একবার ফিরে দেখা যাক ছোটবেলার বন্ধু রাজা মোহাম্মদ আলির সঙ্গে প্রাক্তন প্রধনমন্ত্রীর আবেগময় এই মিলনের সেই গল্প৷ (manmohan reunion childhood friend)

অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশে জন্ম manmohan reunion childhood friend

১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশে (বর্তমানে পাকিস্তানে) জন্মগ্রহণ করেছিলেন মনমোহন। তাঁর গ্রামের নাম ছিল গাহ৷ ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পরিবারের সঙ্গে ভারতে চলে আসেন মনমোহন৷ ছেড়ে আসতে হয় পুরনো বাড়ি, গ্রাম ও প্রাণের চেয়েও প্রিয় বন্ধুদের৷ তবে দুই দেশের মধ্যে কাঁটা তারের বেড়া, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারেনি৷ দূরে থাকলেও টিকেছিল বন্ধুত্বের সম্পর্ক৷ 

   

২০০৪ সালে ড. মনমোহন সিং যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন সেই খবর পৌঁছায় সুদূর পাকিস্তানের গাহ গ্রামে। এই সংবাদ শুনে, তাঁর প্রাক্তন সহপাঠী রাজা মোহাম্মদ আলি, বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ছোটবেলায় একসঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন দু’জনে৷ ভালোবেসে রাজা আলি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ডাকতেন ‘মোহনা’ বলে৷ 

আবেগপূর্ণ মিলন manmohan reunion childhood friend

২০০৮ সালের মে মাস৷ পাকিস্তান থেকে দিল্লিতে আসেন রাজা আলি৷ শৈশবের বন্ধুর সঙ্গে সেই মিলন ছিল সত্যই আবেগপূর্ণ৷ একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন তাঁরা৷ রাজা পাকিস্তান থেকে তাঁদের আলি গাহ গ্রামের মাটি, জল এবং গ্রামের একটি ছবি নিয়ে এসেছিলেন ‘মোহনা’র জন্যে। এখানেই শেষ নয়, বন্ধুর জন্য পাক মুলুক থেকে ১০০ বছর পুরনো একটি শাল এবং তাঁর স্ত্রী গুরশরণ কৌরের জন্য দুটি সালওয়ার কামিজও এনেছিলেন তিনি৷  খালি হাতে বন্ধুকে ফিরে যেতে দেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও৷ তিনি বাল্য বন্ধুকে পাগড়ি, শাল ও একটি টাইটানের ঘড়ি উপহার দেন। এর দু’বছর পর,২০১০ সালে, পাকিস্তানের চকমওয়াল জেলায় ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যু হয় রাজা মোহাম্মদ আলির।

প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী manmohan reunion childhood friend

ড. মনমোহন সিং ছিলেন ভারতের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রী, যিনি ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) সরকারের প্রধান হিসেবে দেশ শাসন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের অর্থনীতিতে আনা হয় ঐতিহাসিক পরিবর্তন এবং যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের স্থান দৃঢ় করে তোলে।

ড. মনমোহন সিংয়ের জীবনের এই হৃদয়স্পর্শী মুহূর্তটি বুঝিয়ে দেয়, জাতিগত পার্থক্য, সীমান্ত সমস্যা এবং বিভাজন সত্ত্বেও, মানুষের সম্পর্ক কখনও ভেঙে যায় না৷ বন্ধুত্বের বন্ধনও অক্ষুণ্ন থাকে।

 Bharat: In 2008, former Indian PM Manmohan Singh reunited with his childhood friend Raja Mohammad Ali in Delhi. Their emotional meeting highlights enduring bonds despite India-Pakistan division. Singh, an economic reformer, passed away at age 92.