পাক জেল থেকে মুক্তি পেয়ে দীর্ঘ ১২ বছর পর বাড়ি ফিরলেন ছবি

২০০৯ সালে হঠাৎই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ছবি মুশাহর নামে এক তরুণ। মুশাহর বিহারের বক্সারের বাসিন্দা। নিখোঁজ হওয়ার সময় মুশাহরের বয়স ছিল ২৩। কীভাবে…

২০০৯ সালে হঠাৎই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ছবি মুশাহর নামে এক তরুণ। মুশাহর বিহারের বক্সারের বাসিন্দা। নিখোঁজ হওয়ার সময় মুশাহরের বয়স ছিল ২৩। কীভাবে মুশাহর পাকিস্তানে পৌঁছে গিয়েছিলেন তা এখনও অজানা। দীর্ঘ ১২ বছর বন্দি ছিলেন পাকিস্তানের জেলে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে মুক্তি দিল পাকিস্তান। পাঞ্জাবের অমৃতসর সীমান্তে পাক কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক রেডক্রস সংস্থার হাতে তুলে দেয় মুশাহরকে। এতদিন করাচির জেলে বন্দি ছিল সে। রেডক্রসের প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বুধবার নিজের বাড়িতে ফিরেছেন মুশাহর। এখন তিনি ৩৫ বছরের এক পূর্ণ বয়স্ক মানুষ।

মুশাহরের পরিবারের দাবি, ২০০৯ সালে তিনি স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেনে চড়েছিলেন। এরপর মুশাহর সম্ভবত কোনওভাবে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাঞ্জাবে। সেখান থেকেই হয়তো ভুল করে সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়েছিলেন পাকিস্তানে। তবে সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য মুশাহর পুলিশের হাতে ধরা পড়েননি। বেশ কয়েক বছর তিনি পাকিস্তানে শ্রমিকের কাজ করে পেট চালাতেন।

   

শেষ পর্যন্ত একদিন পাকিস্তান পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। যথারীতি তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের তরফে মুশাহরের জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল। নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল থানায়। কিন্তু তার আর সন্ধান মেলেনি। যে কারণে মুশাহরের স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যান। ফের বিয়ে করে তিনি সংসারীও হয়েছেন।

 

 

মুশাহর যে কোনও দিন বাড়ি ফিরবে এমন আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তবে মুশাহরের মা বীর্থি দেবীর আশা ছিল, তার ছেলে একদিন ফিরবেই ফিরবে। শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক করাচির জেলে বন্দি থাকা মুশাহরের সন্ধান পায়। তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তার পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। প্রতিবছরই পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে কয়েকজন নিরাপরাধ বিদেশি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান। এবারে সেই তালিকায় ছিল মুশাহরের নাম। ছেলে বাড়ি ফেরার পর তার মা বলেছেন, আজ আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন। এক যুগেরও বেশি সময় পর আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেলাম। এর জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।