দিল্লি পুলিশের উত্তর-পশ্চিম জেলার স্পেশাল স্টাফ গাজিয়াবাদ (ghaziabad) থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনার সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং তিনি প্রথমে তাঁর বিচ্ছিন্ন স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন করেছিলেন, এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকি দেন।
অভিযুক্ত (ghaziabad)একজন আইন স্নাতক এবং তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। তদন্তের সময় পুলিশের কাছে জাল পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে এবং তিনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ বর্তমানে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঘটনার সূত্রপাত ৫ জুন, ২০২৫-এর গভীর রাতে, যখন গাজিয়াবাদ (ghaziabad)পুলিশের কন্ট্রোল রুমে (পিসিআর) একটি অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোন কল আসে, যিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তাকে হত্যার হুমকি দেন। গাজিয়াবাদের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) রিতেশ ত্রিপাঠি জানান, “৫ জুন রাতে, গাজিয়াবাদ কমিশনারেটের কোতোয়ালি থানায় একটি অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোন আসে, যিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন।
আমরা তৎক্ষণাৎ দিল্লি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে এই তথ্য জানাই।” তিনি আরও বলেন, “দিল্লির স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, কিন্তু ততক্ষণে অভিযুক্ত তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন, যার ফলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।” দিল্লি পুলিশ ৬ জুন থেকে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে, যখন গাজিয়াবাদ(ghaziabad) পুলিশ তাদের এই হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে।
তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে কলটি গাজিয়াবাদের (ghaziabad)পঞ্চবটী এলাকা থেকে করা হয়েছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রাথমিকভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল স্টাফ তীব্র প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে তাঁকে গাজিয়াবাদের একটি গোপন আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন আইন স্নাতক এবং তাঁর বৈবাহিক জীবনে সমস্যার কারণে মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন।
তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য প্রথমে ফোন করেছিলেন, এবং পরে মদ্যপ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকি দেন। তদন্তে আরও জানা গেছে যে অভিযুক্তের কাছে পুলিশের মতো দেখতে জাল পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, যা তাঁর প্রতারণামূলক কার্যকলাপের ইঙ্গিত দেয়। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শ্লোক ত্রিপাঠি নামে পরিচিত, তবে তিনি প্রায়ই তাঁর পরিচয় পরিবর্তন করেন, যা তাঁকে একজন সম্ভাব্য প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বর্তমানে তাঁকে দিল্লি পুলিশের (ghaziabad) স্পেশাল সেলের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ তাঁর পূর্বের অপরাধমূলক ইতিহাস বা অন্য কোনও বিঘ্নকারী কার্যকলাপের সঙ্গে সংযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
তিনি জেড-শ্রেণির নিরাপত্তা পান, যার মধ্যে ২২ জনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মী, এসকর্ট, নজরদারি কর্মী এবং আটজন স্থায়ী সশস্ত্র প্রহরী রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটলেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তিনি শুক্রবার ওখলার ল্যান্ডফিল পরিদর্শন করেন, শালিমার বাগের বিভিন্ন স্কুলের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আমলাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে রেখা গুপ্তা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী (ghaziabad) হিসেবে শপথ নেন, যা ২৭ বছর পর দিল্লিতে বিজেপির ক্ষমতায় ফেরার ঘটনা চিহ্নিত করে। তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি এই ঘটনার পর নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি উদ্যোগ ভবন এবং নির্মাণ ভবনের মতো সরকারি ভবনে বোমা হামলার হুমকি ইমেলের ঘটনার পর এই হুমকি কলটি পুলিশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও ইমেলগুলি পরে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়, এই ঘটনা নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে আলোকপাত করেছে।
ভারতের ৫টি বিপজ্জনক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, যা শত্রুকে টুকরো টুকরো করে ফেলে!
গাজিয়াবাদ (ghaziabad) পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে দিল্লি পুলিশ এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত করেছে। কলটি গাজিয়াবাদের পঞ্চবটী এলাকা থেকে করা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এবং সিসিটিভি ফুটেজ ও কল রেকর্ড বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অভিযুক্ত গত এক মাসে ৪০-৫০টি কল করে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বিরক্তি সৃষ্টি করেছেন, যার মধ্যে ৫ জুন একাই পাঁচটি কল করেছিলেন। এই তথ্য অভিযুক্তের অভ্যাসগত প্রতারণার প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করে।
এই ঘটনা দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। গাজিয়াবাদ (ghaziabad) পুলিশের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং দিল্লি পুলিশের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি এই গ্রেপ্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশ এখনও এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য বা সংযোগ আছে কিনা তা তদন্ত করছে।
এই ঘটনা রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশেষ করে, এই ধরনের হুমকি কল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে। অভিযুক্তের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই ঘটনার পেছনের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং তাঁর অপরাধমূলক ইতিহাস সম্পর্কে আরও তথ্য প্রকাশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।