পূর্ণ মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে গীতশ্রীর

বাঙালির গানের তুলসীতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ নিভল চিরতরে। প্রয়াত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে গীতশ্রীর।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে শেষকৃত্য হবে। তিনি…

sandhya

বাঙালির গানের তুলসীতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ নিভল চিরতরে। প্রয়াত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে গীতশ্রীর।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে শেষকৃত্য হবে।

তিনি জানান, “প্রয়োজনে আজ রাতে পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হবে দেহ। কাল ১২টা নাগাদ মরদেহ নিয়ে রবীন্দ্র সদনে রাখা হবে। ৫টা পর্যন্ত সেখাানেই শায়িত থাকবে দেহ। সেখানে সম্মান জানানো যাবে। আগামীকাল রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে শেষকৃত্য হবে।’

সন্ধ্যার প্রয়াণে ব্যথিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি ভাবতে পারিনি মারা যাবেন। গতকাল রাতে অস্ত্রোপচারের পর খবর এসেছিল। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। এত তাড়াতাড়ি এমনটা ঘটে যাবে তা বুঝতে পারিনি। আমরা যকৃতের চিকিৎসকে পাঠাব বলে ঠিক করেছিলাম। তখন জানতে পারলাম উনি আর নেই। কোভিড থেকে মুক্ত হওয়ার পর সব ঠিক ছিল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত। কী যে হয়ে গেল! উনি স্বর্ণালি সময়ের শিল্পী। সেই যুগের সকলেই চলে গিয়েছেন। উনি ছিলেন। উনিই শেষ সুরের ঝঙ্কার, সুরের স্পন্দন, গানের ইন্দ্রধনু। ওঁর গাওয়া কত গান মনে পড়ছে এখন।’’

গত ২৬ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই প্রবাদ প্রতিম সঙ্গীতশিল্পী। পর দিন তাঁকে গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তড়িঘড়ি গঠিত হয় মেডিক্যাল বোর্ড।

জানা যায়, শৌচাগারে পড়ে গিয়ে চোট পান শিল্পী। এর পর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও। তাঁর দু’টি ফুসফুসেই সংক্রমণ দেখা দেয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। চিকিৎসার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ স্থিতিশীল হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ তাঁর শারীরিক জটিলতা বাড়ে।

বাংলা অভিনয়ের জগৎ যেমন সাবালক হয়েছিল উত্তম-সুচিত্রা জুটির হাত ধরে, তেমনই বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা আধুনিক এবং ফিল্মের গান সাবালকত্ব লাভ করেছিল হেমন্ত-সন্ধ্যা বা মান্না-সন্ধ্যা জুটির সৌজন্যে।

একই সঙ্গে শাস্ত্রীয়সঙ্গীত, লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, আধুনিক গান, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং সেই সঙ্গে মুম্বইয়ে হিন্দি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক— এত দীর্ঘ সময় ধরে বাংলার কোনও শিল্পীর সঞ্চারপথ এত ব্যাপক নয়। প্রকৃতার্থেই তিনিই তো ‘গীতশ্রী’! সম্প্রতি কেন্দ্র তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। ‘গীতশ্রী’ তা প্রত্যাখ্যান করেন।