মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) ফড়ণবীস সরকার সোমবার এক গুরুত্বপূর্ণ রেজোলিউশন জারি করে ঘোষণা করেছে যে, এখন থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিসে মারাঠি ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের সরকারি, আধা সরকারি অফিস এবং কর্পোরেশনগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সরকারের উদ্দেশ্য হলো, রাজ্যের ভাষা এবং সংস্কৃতির পরিচিতি বাড়ানো এবং মারাঠি ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা।
মহারাষ্ট্র (Maharashtra) সরকারের নতুন রেজোলিউশনে বলা হয়েছে যে, সমস্ত সরকারি অফিসের কর্মীদের তাদের দপ্তরে আসা নাগরিকদের সঙ্গে মারাঠি ভাষায় কথা বলতে হবে, তবে ভিনরাজ্যের বাসিন্দা বা বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে মারাঠিতে কথা বলার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। অর্থাৎ, রাজ্যের বাইরে থেকে আসা মানুষ বা বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সরকারি কর্মীদের নিজের সুবিধা অনুযায়ী অন্য ভাষায় কথা বলার অনুমতি থাকবে। তবে, রাজ্যের মারাঠি ভাষী নাগরিকদের সঙ্গে অবশ্যই মারাঠিতে কথা বলতে হবে, আর তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারি কর্মীদের।
এই রেজোলিউশনটি মারাঠি ভাষাকে এক নতুন মর্যাদা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু, এই নিয়মের বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠতে পারে। বিশেষ করে, ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের সঙ্গে মারাঠিতে কথা বলা বাধ্যতামূলক না হওয়া, তাদের কীভাবে মারাঠি ভাষায় কথা বলা উচিত, সেই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
এছাড়া, সরকারি কর্মীদের জন্য এই নির্দেশিকা অনুসরণ না করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটিও পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি কোনও সরকারি কর্মী এই নিয়ম অনুসরণ না করেন, তবে সেটি সরকারি নিয়মভঙ্গি হিসেবে গণ্য হবে এবং সাধারণ মানুষ ওই কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগের পর যদি কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া হয় বা অভিযুক্ত কর্মী শাস্তি না পান, তবে অভিযোগকারী মহারাষ্ট্র বিধানসভার মারাঠি ভাষা কমিটির কাছে তার অভিযোগ জমা দিতে পারবেন। এটি নিশ্চিত করবে যে, রেজোলিউশনের প্রতি সম্মান বজায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।
এই রেজোলিউশনে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকও উঠে এসেছে। যেমন, সরকারি অফিসের কম্পিউটারের কী-বোর্ডে রোমান আলফাবেটের পাশাপাশি মারাঠি দেবনগরী আলফাবেটও থাকতে হবে। আর সরকারি অফিসের সাইনবোর্ডও মারাঠি ভাষায় থাকবে। এর মাধ্যমে সরকার নিশ্চিত করতে চাইছে যে, সমস্ত অফিস এবং কর্মস্থলে মারাঠি ভাষার ব্যবহার একটি সাধারণ প্রথা হয়ে উঠুক।
মহারাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য মূলত রাজ্যের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এবং মারাঠি ভাষাকে আরও শক্তিশালী করা। তবে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জও হতে পারে, বিশেষ করে সরকারি কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়নকে কেন্দ্র করে। যদিও, সরকার আশাবাদী যে এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে রাজ্যে মারাঠি ভাষার ব্যবহার আরও প্রসারিত হবে।