ভোটগ্রহণের (Maharashtra Election 2024) প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফলও প্রকাশিত হয়েছে। এবার অপেক্ষা ফলপ্রকাশের। আগামিকাল, শনিবার সকাল থেকে শুরু হবে নির্বাচনী ফলের ঘোষণা, যা শুধু রাজনীতির কাঠামোতেই নয়, বরং মহারাষ্ট্রের (Maharashtra Election 2024) রাজনীতির গতিপথকেও পরিবর্তন করতে পারে। ভোটারদের মতামত অনুযায়ী, শাসক জোট মহায়ুতি সামনের দিকে এগিয়ে থাকলেও, বিরোধী জোট মহা বিকাশ আঘাড়ি তাদের পিছনে রয়েছে। তারা নিজেদের শক্তি ধরে রেখে নির্বাচনে চূড়ান্ত লড়াইয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
২৬/১১ মুম্বই হামলার অভিযুক্ত তাহাওয়ার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার গঠনের দৌড়ে কে শেষ হাসি হাসবে? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা জল্পনা। যে কারণে শুক্রবার থেকেই উভয় পক্ষ নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিজয়ী বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে তাঁদের জোটের খুঁটিতে বেঁধে রাখার জন্য মহারাষ্ট্র, গুজরাত, এবং গোয়ার হোটেল-রিসর্ট ও হেলিকপ্টার বুকিং চলছে।
মহায়ুতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একনাথ শিন্ডের শিবসেনা, শারদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ারের এনসিপি, এবং বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। এই জোটের নেতা এবং নেত্রীরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন হোটেল এবং রিসর্ট বুক করে রেখেছেন, যেখানে তাঁরা তাঁদের নির্বাচিত বিধায়কদের একত্রিত করবেন। শাসক জোটের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিজয়ী বিধায়কদের হাতে রেখে যেন তারা কোনোভাবে অন্য দলে যোগদান করতে না পারেন।
মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে রিসর্ট রাজনীতি একটি পরিচিত পন্থা। ভোটের ফলাফলের পরে দলগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাপ এবং রাজনীতির স্বার্থে নেতাদের ধরে রাখার জন্য এই কৌশল ব্যবহার করা হয়। শাসক জোটের জন্য এর প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে গেছে, কারণ তাঁদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা জরুরি। শিন্ডে এবং ফড়নবিশদের নেতৃত্বে এই প্রস্তুতি চলছে অত্যন্ত সচেতনভাবে।
অন্যদিকে, বিরোধী জোট মহা বিকাশ আঘাড়ি, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সঞ্জয় রাউত, এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব, তারাও পাল্টা রিসর্ট রাজনীতিতে নামতে প্রস্তুত। বিরোধী জোটের নেতারা জানাচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোটারদের চাহিদা এবং সমর্থন বজায় রাখা এবং পাশাপাশি শাসক জোটের নেতাদের প্রতি নজর রাখা।
ঘুষকাণ্ডে আদানীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা, প্রত্যার্পণের দাবি তুলবে আমেরিকা
বিরোধী নেতারা বিভিন্ন হোটেল এবং রিসর্টে বৈঠক করতে শুরু করেছেন, যেখানে তারা নিজেদের মধ্যে কৌশল বিনিময় করছেন। তারা জানেন, সরকারের গঠনে আসন্ন ফলাফলগুলোর ওপর তাঁদের ভাগ্য নির্ভর করছে। তাই, এই মুহূর্তে যেকোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য তাঁরা প্রস্তুত।
মহারাষ্ট্র, গুজরাত, এবং গোয়ার বিভিন্ন হোটেল এবং রিসর্টগুলোর বুকিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের সুবিধার্থে এইসব স্থানে অবস্থান করতে চান। এই কৌশলটি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরেই কার্যকর হবে। নির্বাচনী ফলাফলের পর, সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা এবং যোগাযোগের জন্য তাঁরা এই স্থানে উপস্থিত থাকবেন।
হেলিকপ্টার বুকিংয়েরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেহেতু এই রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগের সুবিধা সীমিত, তাই হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত যাতায়াত জরুরি। রিসর্ট রাজনীতির জন্য এই ধরনের প্রস্তুতি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যা রাজনীতির মাঠে দলগুলোর মধ্যে তৎপরতা বাড়াচ্ছে।
মাছ ধরতে গিয়ে নৌসেনার সাবমেরিনের সঙ্গে ধাক্কা, নিখোঁজ একাধিক মৎসজীবী
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধিতা এবং সমালোচনা চলছে। নির্বাচনী ফলাফলের পরে, এই দুটি পক্ষের মধ্যে কিভাবে সমঝোতা হবে, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। শাসক মহায়ুতি এবং বিরোধী মহাবিকাশ আঘাড়ির মধ্যে রাজনৈতিক চাপ এবং উত্তেজনা বাড়ছে।
এখনকার পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, এই ভোটের ফলাফল কেবল রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে। সরকারের পরিবর্তন কিংবা অব্যাহত থাকার সিদ্ধান্ত নেবে ভোটের ফলাফলই।