মুখেই ‘বেটি বাঁচাও…’ মহিলাদের নিয়ে হাড়হিম করা তথ্যে অস্বস্তিতে বিজেপি, কোথায় মহিলা কমিশন?

বিজেপি শাসিত রাজ্যে নারী নির্যাতনের এক ভয়াবহ চেহারা বেরিয়ে এল। সম্প্রতি এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিগত ৩ বছরে ৩১ হাজার মহিলা ও শিশু নিখোঁজ হয়েছে…

বিজেপি শাসিত রাজ্যে নারী নির্যাতনের এক ভয়াবহ চেহারা বেরিয়ে এল। সম্প্রতি এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিগত ৩ বছরে ৩১ হাজার মহিলা ও শিশু নিখোঁজ হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। আর এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায়এ রিপোর্টটি পেশ করা হয়। যাতে বলা হয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন করে মহিলা ও তিন জন কিশোরী মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় একটি রাজ্যে! ভাবা যায়! ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কিংবা ‘লাডলি বহেনার’ মতো প্রকল্প নিয়ে আড়ম্বর যদি মুদ্রার একটি পিঠ হয়, তাহলে অপর পিঠে এই পরিসংখ্যান যেন এক ভয়ঙ্কর ছবি দেখাচ্ছে!

   

জেলমুক্তির পরই বড় চমক হেমন্ত সোরেনের, ফিরছেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে

এই বিপুল সংখ্যক নারী পাচার হলেও থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে মাত্র হাতে গোনা। এই তিন বছরে কেবল ৭২৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় এই পরিসংখ্যান এবার সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে।
২০০৩ সাল থেকে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার চলছে। একটানা ২১ বছর।  গত বিধানসভা ভোটেও বিজেপি সেখানে জিতেছে। মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বালা বচ্চন নিঁখোজ হয়ে যাওয়া মহিলাদের সংখ্যা জানতে চেয়েছিলেন। তার জবাবেই এই পরিসংখ্যান জানিয়ে বিধানসভায় জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার।

‘ভোলে বাবা’র নিরাপত্তারক্ষীদের ঠেলাঠেলিতেই বিপত্তি! দাবি হাতরসের এসডিএমের

২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ৩১ হাজার মহিলা ও কিশোরী নিখোঁজ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু উজ্জয়িনীতেই গত ৩৪ মাসে নিখোঁজ হয়েছে ৬৭৬ জন মহিলা। অথচ একটি মামলাও সে ব্যাপারে দায়ের হয়নি। ইন্দোরেও এক মাসে ৪৭৯ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। অথচ মাত্র ১৫টি মামলা দায়ের হয়েছে। সাগর জেলায় নিঁখোজের সংখ্যা ২৩৮৪। কিন্তু মাত্র ২৪৫টি মামলা দায়ের হয়েছে।

হাতরাসের বিজেপি ঘনিষ্ঠ ‘ভোলে বাবা’র চেম্বারে শুধু মেয়েদের এন্ট্রি

মধ্যপ্রদেশে চার বারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান। লাভলি লাডলি যোজনা, লাভলি বহেনা যোজনার মতো প্রকল্প চালু করে তিনি মহিলাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। আর এই ভয়াবহ তথ্য সামনে আসতেই শআাসকা বিজেপিকে আক্রমণ করতে পিছুপা হয়নি কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা জিতু পাটোয়ারির কথায়, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার কতটা স্পর্শকাতরতাহীন তা এই ঘটনায় প্রমাণিত। অথচ এই বিজেপিই মহিলা সুরক্ষার নামে গোটা দেশে লেকচার দিয়ে বেড়ায়!

চোপড়ায় নারী নির্যাতন: ‘এখন মুখে কুলুপ কেন?’ মমতাকে নিশানা মোদীর

তবে এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিজেপি নেতৃত্ব। সাধারনত এর আগে বহুবার দেখা গিয়েছে কোনও অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও নারী নির্যাতনের ঘটনা সামনে এলেই জাতীয় মহিলা কমিশন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিজেপি নেতারা। বাংলার ক্ষেত্রে সন্দেশখালির ঘটনায় এমন দেখা গিয়েছে, সম্প্রতি কোচবিহারে মহিলা নির্যাতনের ঘটনাতেও জাতীয়স্তরে অতি সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনকে। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যে এর আগে কখনই সক্রিয় হতে দেখা যায়নি মহিলা কমিশনকে। এই ধরনের দ্বিমুখী নীতির নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এমন প্রশ্ন তুলে আগেও সরব হয়েছিল রাজনৈতিক মহল। এবার মধ্যপ্রদেশে এমন ভয়াবহ পরিসংখ্যান নিয়ে কী বলবে জাতীয় মহিলা কমিশন? সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেশ।