চেন্নাইয়ের আকাশে ধরা দেবে চব্বিশের শেষ সুপার মুন

আজ, ১৫ নভেম্বর, চেন্নাইবাসীরা এক বিশেষ আকাশীয় ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছেন, কারণ আজ রাত ২০২৪ সালের শেষ সুপার মুন (Last Supermoon of 2024) দেখা যাবে…

large supermoon illuminates the night sky over Chenna

আজ, ১৫ নভেম্বর, চেন্নাইবাসীরা এক বিশেষ আকাশীয় ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছেন, কারণ আজ রাত ২০২৪ সালের শেষ সুপার মুন (Last Supermoon of 2024) দেখা যাবে শহরের আকাশে। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব হবে প্রায় ৩৬০,০০০ কিলোমিটার, যা এটিকে একটি চমকপ্রদ দৃশ্য বানাচ্ছে। এদিন চাঁদের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪% বড় এবং উজ্জ্বলতাও ৩০% বেশি থাকবে, যা চাঁদের এক অপূর্ব দৃশ্য উপস্থাপন করবে।

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসের পূর্ণিমাকে “বিভার মুন” বা “বিভার চাঁদ” হিসেবে পরিচিত, এবং এই সময়ে চাঁদ তার কক্ষপথে সেরা কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছায়, যার ফলে এটি একটি সুপার মুনে পরিণত হয়। চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবী থেকে একটি এলিপটিক্যাল আকারে চলে, এবং যখন চাঁদ পৃথিবীর কাছে আসতে থাকে, তখন এটি সুপার মুনের রূপ ধারণ করে।

   

চাঁদের পৃথিবী থেকে গড় দূরত্ব হল ৩৮৪,০০০ কিলোমিটার, কিন্তু সুপার মুনের সময় চাঁদ পৃথিবী থেকে ১৪% বড় এবং ৩০% বেশি উজ্জ্বল দেখায়। এটি বছরে ৩-৪ বার ঘটে, যার প্রতিটি দৃশ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় পরিণত হয়। আজকের সুপার মুনের জন্য চেন্নাইবাসীরা প্রস্তুত, কারণ এটি এক বিরল আকাশীয় দৃশ্য হতে চলেছে।

বিশেষ আকর্ষণ চেন্নাই আকাশে
চেন্নাইবাসীরা আজ রাতে এই দুর্লভ দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, সূর্যাস্তের পর প্রায় ৭টার সময় সুপার মুনটি আকাশে দৃশ্যমান হবে। চেন্নাইয়ের আকাশে এই চাঁদকে উজ্জ্বল এবং বৃহত্তর আকারে দেখা যাবে। যে সকল মানুষ আকাশের দিকে তাকাবেন, তাদের জন্য এটি একটি অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।

এটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরবর্তী সুপার মুন ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে হবে। তাই আজকের এই রাতের সুপার মুন চেন্নাইবাসীদের জন্য একটি বিরল সুযোগ। যদি আপনি একে উপভোগ করতে চান, তবে আপনাকে আকাশের দিকে তাকাতে হবে এবং আকাশের এই ঐতিহাসিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে হবে।

দ্বৈত রেইনবো: চেন্নাই আকাশে একটি বিরল দৃশ্য
এছাড়াও, গতকাল চেন্নাই আকাশে একটি বিরল দ্বৈত রেইনবো দেখা গেছে। ভারী বৃষ্টি এবং মাঝারি সূর্যকিরণের মধ্যে শহরের আকাশে এই রেইনবো তৈরি হয়। দ্বৈত রেইনবো তখনই তৈরি হয় যখন সূর্যরশ্মি একটি বৃষ্টির পানি কণার মধ্যে দু’বার প্রতিফলিত হয়। এর ফলে দ্বিতীয় রেইনবো তৈরি হয়, যার রঙের ক্রম সম্পূর্ণভাবে উল্টানো থাকে।

চেন্নাই শহরের আকাশে এই দ্বৈত রেইনবো দেখা গিয়েছিল এবং এই দৃশ্যটি অত্যন্ত সৌন্দর্যপূর্ণ ছিল। চেন্নাইয়ের বাসিন্দারা এই বিরল দৃশ্য দেখে অভিভূত হন। এই রেইনবো এর পূর্বে কিছু দিন আগে ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর বেঙ্গালুরু এবং ৮ জুন কোইম্বাটুরে একই ধরনের দৃশ্য দেখা গিয়েছিল।
দ্বৈত রেইনবোরের প্রথম রেইনবোটি সাধারণত লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল,-indigo, এবং বেগুনি রঙের রংয়ের ক্রমে দেখা যায়, কিন্তু দ্বিতীয় রেইনবোতে এই রঙের ক্রম সম্পূর্ণ উল্টানো থাকে। এক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন প্রকৃতির এক নতুন দিককেই উন্মোচন করে। এটি একটি বিরল এবং চমকপ্রদ দৃশ্য।

প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করুন
এই উজ্জ্বল চাঁদ এবং দ্বৈত রেইনবো নিয়ে চেন্নাইবাসীরা সত্যিই ভাগ্যবান। এটি প্রকৃতির এক বিশেষ উপহার। এসব ঘটনায় শহরের বাসিন্দারা প্রকৃতির সৌন্দর্য সম্পর্কে নতুনভাবে সচেতন হচ্ছেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা আনন্দ উপভোগ করছেন এবং এর মধ্যে দিয়ে তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অস্থিরতা থেকে কিছুটা মুক্তি পাচ্ছেন।

অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলেন যে সুপার মুন একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা, এবং এটি নক্ষত্রবিদ্যা এবং মহাবিশ্বের বিভিন্ন বিচিত্র ঘটনাগুলির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ায়। এখন শহরের আকাশের দিকে তাকালে একে উপভোগ করা যায়।

এটি প্রকৃতির এক বিরল দৃশ্য যা শহরের আকাশকে এক নতুন রূপ দিয়েছে এবং মানুষের মাঝে একটি গভীর অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে মানুষ এক নতুন শক্তি এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে।

চেন্নাই আকাশে আজকের এই সুপার মুন এবং দ্বৈত রেইনবোরের মত বিরল দৃশ্য সত্যিই অসাধারণ। আকাশের এই মুগ্ধকর দৃশ্যগুলি শহরের বাসিন্দাদের কাছে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। যারা প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং আকাশের অজানা রহস্যে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি এক নতুন সুযোগ।