লালু-ঘনিষ্ঠ জন সুরজের সমর্থককে গুলি করে হত্যা!

পাটনা: বিহারে বিধানসভা নির্বাচন (Bihar Assembly Election) যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এই আবহে মোকামায় এক প্রশান্ত কিশোরের (PK) জন সুরজ পার্টির (Jan Suraaj Party) এক সমর্থককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে!

Advertisements

জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে মোকামার ঘোসবাড়ি থানা এলাকায় দুলাল চন্দ যাদব নামক জন সুরজের এক সমর্থকের উপর গুলি চালায় কিছু দুষ্কৃতি। ঘটনায় মারা গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।এই ঘটনায় কেবলমাত্র যে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তা নয়, বরং ভোটমুখী বিহারের মোকামার (Mokama) রাজনীতিতেও ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘোসবাড়ি বাজার এলাকায় পৌঁছতেই তাঁর উপর ব্যাপক গুলি বর্ষণ করে কিছু দুষ্কৃতি। ঘটনাস্থলেই মারা যান দুলাল যাদব নামক জন সুরজের ওই সমর্থক।

   

ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাবাসী তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ঘোসবাড়ি থানার পুলিশ বাহিনী। মৃতদেহটি হেফাজতে নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করার জন্য ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করা হয়েছে।

লালু-ঘনিষ্ঠ ছিলেন দুলাল যাদব

জানা গিয়েছে, লালু প্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav) সঙ্গে দুলাল চন্দ যাদবের ভালো ঘনিষ্ঠতা ছিল। হামলার সময় তিনি জন সুরজ পার্টির প্রার্থী (Jan Suraaj Party) পীযূষ প্রিয়দর্শীর হয়ে নির্বাচনী প্রচার করছিলেন। তখন দুই দলের মধ্যে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। ঘটনায় দুলাল চন্দের বুকে গুলি লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

সূত্রের খবর, মোকামা তাল এলাকায় দুলাল চন্দ যাদব বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকে লালু প্রসাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন এলাকায় দুলালের যথেষ্ট দাপট ছিল। লালু প্রসাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। তিনি আরজেডির তৃণমূল ক্যাডারের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

রাজনৈতিক দ্বন্দের জেরেই খুন?

Advertisements

প্রাথমিকভাবে, ভোটের আবহে রাজনৈতিক দ্বন্দের জেরেই খুন হয়েছেন দুলালা চন্দ যাদব বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা, এর আগে মোকামা বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে লড়েছেন তিনি। কিন্তু এবার, জন সুরজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে দ্বন্দের জেরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছে পুলিশ।

সন্দেহের তীর NDA-এর দিকে

এই হত্যাকাণ্ডের জন্য এনডিএ প্রার্থী অনন্ত সিংকে দায়ী করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জন সুরজের অন্যান্য নেতারা পুলিশকে জানিয়েছেন যে তাঁদের প্রার্থী পীযূষ প্রিয়দর্শীর কনভয় এনডিএ (NDA) প্রার্থী অনন্ত সিংয়ের গাড়ির পিছনে ছিল। হঠাৎ অনন্ত সিংয়ের সমর্থকরা তাদের গাড়ি থেকে বেরিয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালায়। মোকামার ঘোসওয়ারিতে এই ঘটনাটি ঘটে।

অন্য একজন ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন যে পীযূষ প্রিয়দর্শীর কনভয় যখন অনন্ত সিংয়ের কনভয় অতিক্রম করে, তখন অনন্ত সিংয়ের লোকেরা হঠাৎ আক্রমণ করে। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক অনন্ত সিং। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ঘোসবাড়িতে কিছু সমাজবিরোধী ব্যক্তি স্লোগান দিতে শুরু করে এবং তাঁকে গালিগালাজ করতে থাকে।

তা সত্ত্বেও, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় উপস্থিত লোকজনের কাছে আগে থেকেই অস্ত্র ছিল। ভোটের আগে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে আরজেডি নেতা সুরজ ভান সিং-এর পরিকল্পনা করেন। তিনি বলেন যে এই ঘটনায় তার বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছেন এবং তার গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।