পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার (Kunal) জেলার দিনহাটার একজন ৫০ বছর বয়সী রাজবংশী ব্যক্তি, উত্তম কুমার ব্রজবাসী, অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল থেকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নোটিস পেয়েছেন। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন ঝড় তুলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal) সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি পিছনের দরজা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চাপানোর চেষ্টা করছে।
তৃণমূলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “কুচবিহারের একজন ৫০ বছর বয়সী রাজবংশী ব্যক্তি, যাঁর কাছে সমস্ত বৈধ নথি রয়েছে, তাঁকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল থেকে এনআরসি নোটিস পাঠানো হয়েছে(Kunal) । এটি বিজেপির পক্ষ থেকে পিছনের দরজা দিয়ে বাংলায় এনআরসি চাপানোর সরাসরি চেষ্টা।”
উত্তম কুমার ব্রজবাসী, দিনহাটার সদিয়ালের কুঠি এলাকার বাসিন্দা, জানিয়েছেন যে তিনি কখনো কুচবিহারের বাইরে যাননি এবং (Kunal) তাঁর পরিবার পাঁচ প্রজন্ম ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছে। তিনি বলেন, “আমি জন্ম থেকেই কুচবিহারে আছি। আমার বাবার নাম ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় ছিল।
আমি কীভাবে অবৈধ অভিবাসী হতে পারি?” নোটিসে দাবি করা হয়েছে, উত্তম ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে অসমের মাধ্যমে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন এবং পুলিশ যাচাইয়ের সময় বৈধ নথি পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নথি জমা দিতে বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Kunal) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল কুচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে এনআরসি নোটিস পাঠিয়েছে, যিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে বসবাস করছেন। এটি গণতন্ত্রের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ।
এটি প্রমাণ করে (Kunal) যে অসমের বিজেপি সরকার বাংলায় এনআরসি চাপানোর চেষ্টা করছে, যেখানে তাদের কোনো ক্ষমতা বা এখতিয়ার নেই।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, এটি প্রান্তিক সম্প্রদায়কে ভয় দেখানো, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা এবং লক্ষ্যবস্তু করার পরিকল্পিত চেষ্টা।
তৃণমূল নেতা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “উত্তম একজন রাজবংশী, এই মাটির সন্তান। অসমের (Kunal) পুলিশের কোনো অধিকার নেই তাঁকে নোটিস পাঠানোর। অসম চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের আগে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা ভারতীয় নাগরিক। বিজেপি বাংলার রাজবংশী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।” তিনি এই ঘটনাকে বিজেপির “বাংলা-বিরোধী” মনোভাবের প্রমাণ হিসেবে দেখছেন।
তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সমীরুল ইসলামও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “যিনি কখনো অসমে যাননি, তাঁর বাবার নাম ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে, তাঁকে কীভাবে অবৈধ অভিবাসী বলা যায়? এটি বিজেপির ভয় দেখানোর কৌশল। আমরা আদালতে এবং রাস্তায় এর বিরুদ্ধে লড়ব।”
অন্যদিকে, (Kunal) বিজেপি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যা বর্ণনা ছড়াচ্ছেন। এটি তৃণমূলের রাজনৈতিক চাল।” প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অসম সরকার বাংলার কোনো নাগরিককে এনআরসি নোটিস দিয়ে লক্ষ্য করতে পারে না।” তবে, তিনি রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই ঘটনা বাংলার রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি এবং নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নির্বাচন (Kunal) কমিশনের মাধ্যমে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে এনআরসি চাপানোর চেষ্টা করছে, যার মূল লক্ষ্য বাংলা। সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তৃণমূল সমর্থকরা এটিকে বিজেপির “বাংলা-বিরোধী” ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিক্ষোভ, অভিযুক্তের দোকানে আগুন
এই নোটিস (Kunal) বাংলার রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। উত্তমের আইনজীবী অপূর্ব সিং বলেন, “অসম সরকার ১৯৬৬ সাল থেকে ভোটার তালিকার প্রমাণ চাইছে, যা জেলা বা রাজ্য প্রশাসনের কাছে নেই।” তিনি এই নোটিসের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে উত্তমকে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে, নইলে তাঁকে অবৈধ অভিবাসী ঘোষণা করা হতে পারে। এই ঘটনা বাংলা ও অসমের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।