অনন্তনাগে ভুয়ো অস্ত্র নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে তিন যুবক আটক

kokernag-youth-held-with-fake-weapons-intimidation-case-anantnag-police

কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার কোকেরনাগ এলাকায় ভুয়ো অস্ত্র ব্যবহার করে স্থানীয় মানুষকে আতঙ্কিত করার অভিযোগ সামনে আসার পর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে পুলিশ (Anantnag Police)। বৃহস্পতিবার প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক খেলনা সদৃশ অস্ত্র হাতে নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছিলেন। এই অভিযোগ সামনে আসার পরই কোকেরনাগ থানার পুলিশ দ্রুত তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

Advertisements

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তারা হিলার এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আহাঙ্গারের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখান। হঠাৎ এই ঘটনার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোকেরনাগ থানায় FIR No. 122/2025 দায়ের করা হয়। অভিযোগে BNS-এর 333 এবং 351(3) ধারার উল্লেখ রয়েছে। দু’টি ধারাই ভয় দেখানো, শারীরিক হুমকি প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা ব্যাহত করার সঙ্গে সম্পর্কিত।

   

পরে কোকেরনাগ পুলিশ ও SOG (Special Operations Group)–এর একটি যৌথ দল, SDPO কোকেরনাগের তত্ত্বাবধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। দলটি দ্রুত সংশ্লিষ্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের নাম—

  1. ইয়াসির আহমদ কাসানা, আন্দেরওয়ানি সাগাম, কোকেরনাগ

  2. আজাজ আহমদ ফামদা, থামানকোটে ভেরিনাগ কাপরান

  3. শাহিদ আহমদ টেলি, হিলার আরহামা কোকেরনাগ

তল্লাশিতে তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে—

  • একটি ভুয়ো (ডামি) AK-47 রাইফেল

  • এক ডামি পিস্তল

  • একটি সবুজ রঙের পাউচ

পুলিশের মতে, এই অস্ত্রগুলি খেলনার মতো হলেও সেগুলোর চেহারা বাস্তব অস্ত্রের মতো হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই ভুয়ো অস্ত্র ব্যবহার করে তারা কেন মানুষের বাড়িতে ঢুকে ভয় দেখাচ্ছিল, তা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনো বড় অপরাধের পরিকল্পনা ছিল কি না বা তারা কারও নির্দেশে এটি করছিল কি না—এসব বিষয়ও তদন্তাধীন।

অনন্তনাগ পুলিশের বক্তব্য—এই দ্রুত পদক্ষেপ এলাকায় সম্ভাব্য অশান্তি বা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। অনেকেই বলেন, রাতের বেলায় অথবা কম জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন ভুয়ো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করলে সাধারণ মানুষ সহজেই আতঙ্কিত হতে পারেন।

Advertisements

পুলিশ জানিয়েছে, আটক তিন জনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং প্রয়োজন হলে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছেন কি না বা এলাকায় কোনো সংগঠিত দুষ্কৃতী চক্র সক্রিয় আছে কি না—সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একই সঙ্গে, অনন্তনাগ পুলিশ স্থানীয়দের আহ্বান জানিয়েছে—

“আপনার আশেপাশে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা অস্বাভাবিক চলাফেরা চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে নিকটতম থানায় খবর দিন।”

তাঁরা আরও বলেন, ভুয়ো অস্ত্র হলেও মানুষের মনে ভয় তৈরি করা একটি গুরুতর অপরাধ এবং ভবিষ্যতে এমন কোনো ঘটনার ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।

বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। এই ঘটনার পর পুলিশ আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে জননিরাপত্তা বজায় রাখতে তারা সর্বদা প্রস্তুত এবং যেকোনো হুমকি বা আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।