Indian Army: ভারতীয় সেনাবাহিনী কেবল একটি সেনাবাহিনী নয়, বরং দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ার চেতনা। শত্রু সীমান্তের ওপার থেকে হোক বা দেশের ভেতর থেকে সন্ত্রাস, ভারতীয় সেনাবাহিনী সর্বদা সাহসিকতা এবং কৌশলের সাথে জয়লাভ করেছে। ভারতের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য অনেক সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং বিশ্বকে দেখিয়েছে যে ভারত তার নাগরিক এবং সীমান্ত রক্ষার জন্য যেকোনো পর্যায়ে যেতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫টি সবচেয়ে সফল এবং ঐতিহাসিক মিশন সম্পর্কে।
অপারেশন বিজয়
কারগিল যুদ্ধ ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং গৌরবময় যুদ্ধগুলির মধ্যে একটি। ১৯৯৯ সালের মে মাসে, পাকিস্তানি সেনা এবং জঙ্গিরা নীরবে কার্গিলের পাহাড় দখল করে নেয়। এর জবাবে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন বিজয়’ শুরু করে। প্রায় ৬০ দিন ধরে চলা এই যুদ্ধে, ভারতীয় সেনারা শত্রুকে পিছু হটিয়ে দেয় এবং প্রতিটি পোস্টের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। এই অভিযান দেশকে ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার মতো সাহসী যোদ্ধা দিয়েছে, যারা ‘ইয়ে দিল মাঙ্গে মোরে’ বলে দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
অপারেশন মেঘদূত
সিয়াচেন হিমবাহকে বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধক্ষেত্র বলা হয়। পাকিস্তান এটি দখলের পরিকল্পনা করছিল, কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তা জানতে পেরেছিল। এর পর, ১৯৮৪ সালের ১৩ এপ্রিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন মেঘদূত’ শুরু করে। মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো কঠোর পরিস্থিতিতে, ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানের আগে সিয়াচেন দখল করে এবং এখনও সেখানে অবস্থান করছে। এই অভিযান কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছিল।
অপারেশন ক্যাকটাস
১৯৮৮ সালে, মালদ্বীপে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোরা মালদ্বীপে পৌঁছে অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন ক্যাকটাস’। এটি বিশ্বের সামনে ভারতের গতি, সক্ষমতা এবং কূটনীতির প্রমাণ হয়ে ওঠে।
অপারেশন পবন
এলটিটিই নামের একটি সংগঠন শ্রীলঙ্কায় সহিংসতা ছড়াচ্ছিল। ভারত সরকার ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্স (আইপিকেএফ) এর অধীনে ‘অপারেশন পবন’ শুরু করে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল এলটিটিই-র দখলকৃত এলাকা খালি করা। যদিও এই অভিযানটি বেশ জটিল এবং দীর্ঘ ছিল, তবুও ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রচুর সংখ্যক এলটিটিই আস্তানা ধ্বংস করে শ্রীলঙ্কায় শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল।
অপারেশন বজরং এবং অপারেশন রাইনো
উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক জায়গায় জঙ্গি গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল, বিশেষ করে অসমে উলফা নামক একটি সংগঠন। সরকার এটি নির্মূল করার জন্য দুটি বড় সামরিক অভিযান শুরু করে, ‘অপারেশন বজরং’ (১৯৯০) এবং ‘অপারেশন রাইনো’ (১৯৯১)। এই অভিযানগুলিতে, ভারতীয় সেনাবাহিনী অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এবং তাদের নেটওয়ার্ক দুর্বল করে দেয়। এটি এই অঞ্চলে শান্তি পুনরুদ্ধারে অনেক সাহায্য করেছিল।
