Gun: আজকের সময়ে, বন্দুককে সাধারণ অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে ভারতে প্রথম বন্দুক কখন এবং কীভাবে এসেছিল? কে এটি প্রবর্তন করেছিল এবং কীভাবে এটি ব্যবহারে এসেছিল? আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে এই গল্পটি খুবই আকর্ষণীয়। ভারতে বন্দুকের আগমন থেকে শুরু করে এর প্রাথমিক ব্যবহার পর্যন্ত পুরো গল্পটি জেনে নেওয়া যাক।
ভারতে বন্দুক কীভাবে প্রবেশ করল?
ভারতে প্রথম বন্দুকের আগমন ঘটে ষোড়শ শতাব্দীতে। বিশ্বাস করা হয় যে বাবর যখন ভারতে এসেছিলেন, তখন তিনি কামান এবং বন্দুকের মতো আগ্নেয়াস্ত্র প্রযুক্তি সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন। ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবর দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করেন। এই যুদ্ধে তিনি কামান এবং বন্দুক ব্যবহার করেন, যা তৎকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য সম্পূর্ণ নতুন ছিল।
এর আগে, ভারতে যুদ্ধে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরবারি, বর্শা, ধনুক এবং হাতি ব্যবহার করা হত। কিন্তু বাবরের সাথে আসা তুর্কি ও মঙ্গোল প্রযুক্তি ভারতীয় যুদ্ধের ধরণকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেয়। বন্দুক এবং বারুদের ভয়ের গভীর প্রভাব পড়েছিল, বিশেষ করে হাতির উপর, যা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
বন্দুকের প্রভাব এবং বিস্তার
বাবরের পর, মুঘলরা এই কৌশলটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে। আকবরের সময়ে এটি আরও বেশি সাধারণ হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে ভারতীয় শাসকরাও এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে রাজপুত, মারাঠা এবং শিখরাও বন্দুক ব্যবহার শুরু করে।
১৭শ এবং ১৮শ শতাব্দীতে যখন ব্রিটিশ, ডাচ, ফরাসি এবং পর্তুগিজরা ভারতে বাণিজ্য করতে এসেছিল, তখন তারা তাদের সাথে উন্নত বন্দুকও নিয়ে এসেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারত দখলে এই প্রযুক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছিল।
ভারতে তৈরি প্রথম দেশীয় বন্দুক
প্রথমদিকে, বাইরে থেকে ভারতে বন্দুক আসত, কিন্তু ধীরে ধীরে দেশেও অস্ত্র তৈরির কাজ শুরু হয়। অনেক স্থানীয় কারিগর বিদেশী বন্দুক দেখে তাদের নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করে স্থানীয় বন্দুক তৈরি করেছিলেন। যদিও তাদের মান বিদেশের যুদ্ধের মতো ভালো ছিল না, তবুও তারা স্থানীয় যুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল।
আজকের যুগ এবং বন্দুকের ভূমিকা
আজ, ভারতের নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানি রয়েছে, যেমন অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি এবং ডিআরডিও, যারা আধুনিক বন্দুক তৈরি করে। এখন ভারত কেবল তার চাহিদা অনুযায়ী বন্দুক তৈরি করে না, কিছু অস্ত্র রফতানিও করে।