শুভম কুমার, কিষাণগঞ্জ: বিহারের কিষাণগঞ্জ (Kishanganj) জেলার পাঠামারি থানা এলাকার দল্লে গ্রাম পঞ্চায়েতের ধোবিভিট্টা গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই পরিবারের ঘর সম্পূর্ণভাবে ছাই হয়ে গেছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় পাঠামারি পুলিশ, এসএসবি জওয়ান এবং গ্রামবাসীদের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।
ধোবিভিট্টা গ্রামের বাসিন্দা মুন্নি দেবী এবং ঘিনানি দেবীর বাড়ি এই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনার সময় ঘরে কোনও যুবক বা সুস্থ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র বৃদ্ধ ও অসুস্থ ঘিনানি দেবী ঘরে ছিলেন। আগুন লাগার সাথে সাথে স্থানীয়রা তৎক্ষণাৎ পাঠামারি পুলিশকে খবর দেয়। কাছাকাছি এসএসবি ক্যাম্প থাকায় জওয়ানরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাশের পুকুর থেকে জল এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়দের মতে, আগুনের শিখা এতটাই তীব্র ছিল যে কাছে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অনেক কষ্টে অসুস্থ ঘিনানি দেবীকে ঘর থেকে বের করা হয়।
আগুনে ঘরে থাকা নগদ টাকা, জমির কাগজপত্র, আধার কার্ড, খাদ্যশস্য এবং পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। আগুন লাগার কারণ এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, তবে তদন্ত চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ধরনের ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তবে পুলিশ ও এসএসবির দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
ঠাকুরগঞ্জের অঞ্চলাধিকারী সুচিতা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ধোবিভিট্টা গ্রামে দুই পরিবারের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অঞ্চলের কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১২,০০০ টাকার ত্রাণ এবং প্লাস্টিক শিট সরবরাহ করা হয়েছে। মুখিয়া প্রতিনিধি গোলাম হাসনাইনের উপস্থিতিতে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এছাড়া, প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল অগ্রবালের প্রতিনিধি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে শুকনো রেশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করেছেন।
এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি বর্তমানে সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা এবং সামাজিক সংগঠনগুলি তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, এই ধরনের দুর্যোগে ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের জন্য আরও দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য আরও সহায়তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ঘটনা গ্রীষ্মকালীন অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি এবং তা মোকাবিলায় প্রশাসনের তৎপরতার গুরুত্ব আরও একবার তুলে ধরেছে।